সেঞ্চুরির মন্ত্র জানালেন তামিম

অনুশীলন করে দূর করেন ক্রিকেটীয় সমস্যাগুলো আর মাশরাফির সঙ্গে কথা বলে পরিণত হন মানসিকভাবে। তাই সবসময়ই নিজের যেকোনো সাফল্যের বড় একটা অংশের কৃতিত্ব মাশরাফিকেই দিয়ে থাকেন দেশসেরা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল।

ব্যতিক্রম হলো না এবারেও। বিপিএলের ষষ্ঠ আসরের ফাইনালে তামিম ইকবালের ঝড়ো সেঞ্চুরির কাছেই মূলত হেরে গিয়েছে ঢাকা ডায়নামাইটস। আর ম্যাচ শেষে তার এ সেঞ্চুরি এবং বিপিএল শিরোপা জয়ের পেছনে বড় কৃতিত্ব দিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজাকেই।

প্রথমবারের মতো বিপিএল শিরোপা জেতা তামিমের উদযাপনটা ছিলো দেখার মতো। ঢাকার ইনিংসের শেষ ওভারের দুই বল বাকি থাকতেই যখন নিশ্চিত হয়ে যায় তখন থেকেই শুরু হয়ে যায় তামিমের স্বস্তিমাখা উদযাপন। পরে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষ করে নিজেদের ড্রেসিংরুমেও প্রায় ৩০-৩৫ মিনিট ধরে চলে উদযাপন পর্ব। তা শেষ করে বিস্তৃত হাসিমুখে আসেন সংবাদ সম্মেলনে।

পরিচিত সাংবাদিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। বিপিএলের আগের আসরের ফাইনালে এই ঢাকার বিপক্ষেই ৬৯ বলে ১৪৬ রানের ইনিংস খেলে ঢাকাকে হারিয়ে দিয়েছিলেন গেইল। এবার গেইলের জায়গায় নামটা বদলে হয়েছে তামিম, আবারো ফাইনাল হেরেছে ঢাকা।

গেইলের মতো অমন কীর্তি গড়ে ফেলবেন ভেবেছিলেন কি তামিম? মাশরাফিকে পুরো কৃতিত্ব দিয়ে তামিমের সোজাসাপটা জবাব, ‘সত্যি কথা আমি খুব চিন্তিত ছিলাম। এক্ষেত্রে আমি মাশরাফি ভাইয়ের কৌশল ব্যবহার করছিলাম।

উনি সব সময় বলেন যে, আমি জিতব, আমি জিতব। উনার মনে কি থাকে সেটা জানি না, কিন্তু সবার মনে বিশ্বাস এনে দেন। পুরো বিপিএলে আমার এই ট্যাকটিকসটাই ছিল। উনার থেকেই কপি করা বলতে পারেন। প্রথম দিন থেকে আজকের দিন পর্যন্ত আমি সব সময় বলে আসছি আমরাই জিতব, আমরাই জিতব।

চিন্তিত ছিলাম। আমার যেটা দরকার ছিল, আমি ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করি দলের ভেতরে। আমরা মন তো ওরা দেখতে পারছে না। বাট আমার ডাক তো ওরা শুনতে পারছে।’

এসময় নিজের ইনিংসের বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তামিম বলেন, ‘সত্যি কথা আমি কোনো দিনও চিন্তা করিনি এরকম ইনিংস খেলব। ব্যাটিং নিয়ে একটা কথা বলতে চাই, আমি খুব ভালো করে পরিকল্পনা সাজিয়ে এমন ইনিংস খেলেছি।

কারণ আমি অন্য পাশের ব্যাটসম্যানকে বারবার একটা জিনিস বলেছি, সাকিব আর নারিনকে যেন উইকেট না দেই। যদি দেখেন পুরো ইনিংসে নারিনকে একটা ছক্কা ছাড়া কোনো ঝুঁকি নিয়েছি বলে মনে হয় না। এ দুইজন বোলার ওদের খুবই ভাইটাল। ওদের সাফল্যের পেছনে এ দুইজনের অবদান ছিল। আমি পেসারদের জন্য অপেক্ষা করেছি।’

বিপিএলে নিজের প্রথম সেঞ্চুরির মঞ্চ হিসেবে তামিম বেছে নিয়েছেন ফাইনাল ম্যাচটিকেই। মাত্র ৫০ বলে সেঞ্চুরি করার পর পুরো বিশ ওভার ব্যাটিং করা তামিম খেলেছেন ৬১ বলে ১০ চার ও ১১ ছক্কায় ১৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস। তার এ ইনিংসে ভর করে কুমিল্লা পায় ১৯৯ রানের বিশাল সংগ্রহ, পরে শিরোপা নিশ্চিত করে ১৮ রানের জয়ে।

বড় কোনো ম্যাচ কিংবা উপলক্ষ্যের আগে সবসময়ই চিন্তিত থাকেন তামিম। ব্যাট করতে নামার পর প্রথম কয়েক বল ঠিকঠাক ব্যাটে না হলে ঘাবড়ে যান আরো বেশি। ফাইনাল ম্যাচেও অনেক চিন্তা ঘুরছিলো তার মনে। তবে মাশরাফির মন্ত্রে ইতিবাচক ছিলের শুরু থেকেই। যে কারণে করেছেন সেঞ্চুরি, জিতেছেন বিপিএল শিরোপা।

আরো একবার মাশরাফিকে কৃতিত্ব দিয়ে তামিম বলেন, ‘ম্যাচের আগে আমি অনেক চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু মাশরাফি ভাইয়ের কথা মেনেই আমি রিল্যাক্স ছিলাম। ফাইনাল, সেমিফিাইনাল খেলার আগে খুব চিন্তিত হয়েছিলাম।

বিশেষ করে যখন দায়িত্বটা আমার কাঁধে আসে। আমি যেটা করেছি, যেরকম পরিস্থিতি আসুক না কেন আমি ইতিবাচক শুরু করব। এটার পুরো কৃতিত্ব মাশরাফি ভাইয়ের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *