ভারতে চিনি উৎপাদন বাড়বে ১.৫%
চলতি ২০১৮-১৯ উৎপাদন মৌসুমে ভারতে আগের উৎপাদন মৌসুমের তুলনায় চিনি উৎপাদন ১ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়বে। দেশটির চিনিকল সমিতি (আইএসএমএ) জানিয়েছে, দেশের চিনিকলগুলো গত ১ অক্টোবর থেকে গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ৩২১ দশমিক ১৯ টন চিনি উৎপাদন করেছে, যা আগের মৌসুমের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৩৬ টন বেশি। খবর ইকোনমিক টাইমস।
এদিকে চলতি উৎপাদন মৌসুমে ভারতে চিনি উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাড়লেও আগামী উৎপাদন মৌসুমে কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ এ বছর দেশটির প্রধান চিনি উৎপাদনকারী রাজ্য মহারাষ্ট্রে পানি সংকটের কারণে আখের উৎপাদন কম হতে পারে।
তাছাড়া গত উৎপাদন মৌসুমের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত যেখানে ১১০টি চিনিকল চালু ছিল, সেখানে চলতি উৎপাদন মৌসুমের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চালু ছিল ১০০টি। আখ সংকটের কারণে বেশ কয়েকটি মিলের উৎপাদন আগেই বন্ধ হয়ে গেছে।
কমসংখ্যক চিনিকল উৎপাদনে থাকায় চলতি মৌসুমে উৎপাদিত চিনির অবশিষ্ট গত উৎপাদন মৌসুমের ১ মে থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের অবশিষ্টের চেয়ে বেশ কমই হবে।
আইএসএমএ আরো জানিয়েছে, ভারতের উত্তরাঞ্চলে আখ উৎপাদন গত বছরের তুলনায় বেশ ভালো হয়েছে। মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকেও বেশ ভালো ফলন হয়েছে। যদিও উত্তর ভারতে খুব বেশি ভালো ফলন হয়নি। এর ফলে গত মৌসুমের তুলনায় এবার আখ মাড়াইয়ের পরিমাণ কম হলেও ২০১৮-১৯ উৎপাদন মৌসুমে চিনির উৎপাদন আগের মৌসুমের তুলনায় কিছুটা বেশিই হবে।
এ পরিস্থিতিতে ভারতে চলতি মৌসুমে ৩৩০ লাখ টন চিনি উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা গত মৌসুমের তুলনায় পাঁচ লাখ টন বেশি।
এদিকে গত ১৫-২০ দিনের মধ্যে চিনি উৎপাদনের গতি কমে গেছে। কারণ বেশ কয়েকটি মিল গত উৎপাদন মৌসুমের তুলনায় বেশ আগেই আখ মাড়াই বন্ধ করে দিয়েছে।
গত এপ্রিল পর্যন্ত মহারাষ্ট্র রাজ্যে চিনি উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ১০৭ লাখ টন এবং একটি ছাড়া রাজ্যের সব চিনিকল আখ মাড়াই এরই মধ্যে বন্ধ করে দিয়েছে।
উত্তরপ্রদেশে মিলগুলো মোট উৎপাদন করেছে ১১২ দশমিক ৬৫ লাখ টন, গত উৎপাদন মৌসুমের একই সময়ের তুলনায় যা শূন্য দশমিক ২৭ লাখ টন বেশি। এ বছর রাজ্যের মোট ১১৯টি চিনিকল আখ মাড়াই করেছে। যেখানে এরই মধ্যে ৫১টি কলে আখ মাড়াই শেষ এবং ৬৮টি এখনো চালু আছে।
এ বছরের মতো আখ মাড়াই শেষ করেছে কর্ণাটকের সব কয়টি চিনিকল। উৎপাদন করেছে মোট ৪৩ দশমিক ২ লাখ টন।
অন্যদিকে গুজরাট, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানা এবং মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড় রাজ্য উৎপাদন করেছে যথাক্রমে ১১ দশমিক ১৯ লাখ টন, ৭ দশমিক শূন্য ৫ লাখ, ৭ দশমিক ৬ লাখ ও ৫ দশমিক ৩ লাখ টন। এছাড়া বিহার, পাঞ্জাব ও হরিয়ানার চিনিকলগুলো উৎপাদন করেছে যথাক্রমে ৮ দশমিক ৩৫ লাখ টন, ৭ দশমিক ৭ লাখ ও ৬ দশমিক ৭৫ লাখ টন।
মৌসুমের শুরুতে (২০১৮ সালের ১ অক্টোবর) মজুদ চিনির (ব্যালান্স) পরিমাণ ১০৭ লাখ টন, প্রাক্কলিত উৎপাদন ৩৩০ লাখ টন এবং অভ্যন্তরীণ ভোগ ২৬০ লাখ টন ও প্রাক্কলিত রফতানি ৩০ লাখ টন ধরে ২০১৮-১৯ উৎপাদন মৌসুমের শেষ নাগাদ (৩০ সেপ্টেম্বর) চিনির মজুদ ১৪৭ লাখ টন থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং এই মজুদ গত মৌসুমের তুলনায় অনেক বেশিই।
তবে মহারাষ্ট্রে আখের আবাদ হ্রাস এবং গত মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এ রাজ্যে ফলনও বেশ কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভারতের চিনির উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কাই বেশি।