বিশ্ব সভায় মাথা উঁচু করে চলবে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ কারও কাছে হাত পেতে চলবে না, বাংলাদেশ বিশ্ব সভায় মাথা উঁচু করে চলবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, আমি জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ যে তারা আমাদের ওপর বিশ্বাস রেখেছেন, আস্থা রেখেছেন। আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। তাদের মর্যাদা যেমন আমরা রক্ষা করব সেই সঙ্গে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা এটাই আমাদের লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একদিকে চিকিৎসা অপর দিকে পুষ্টিকর খাদ্য। এই দুটোর সমন্বয় হলেই আমাদের দেশের মানুষ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে। আজকের শিশু আগামী দিনের সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হোক। দরিদ্র মা বা কর্মজীবী মা, যারা সন্তানসম্ভবা তাদের আমরা ভাতা দিচ্ছি। আবার সন্তান প্রসবের পর মা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ায় তাকেও আমরা ভাতা দিচ্ছি। যাতে ওই শিশুটা একটু হৃষ্টপুষ্ট হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, বিভিন্ন দোকানের খাবার বা রেস্তোরাঁর খাবার, ভেজাল বা বাসি-পচা খাবার সেগুলোর ব্যাপারে আমাদের যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। এখানে নাগরিক সচেতনতা একান্তভাবে দরকার। জনগণ যদি সচেতন হয়, তাহলে এভাবে জনগণকে কেউ খাবার নিয়ে ঠকাতে পারবে না। আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় তা আমরা করব এবং করে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস আমি করে দিয়েছি। এটা মাত্র ৩ মাস ছিল। প্রথমবার ক্ষমতায় এসে ৪ মাস করেছিলাম, দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে ৬ মাস করে দিয়েছি। মা যাতে শিশুকে ভালোভাবে লালন-পালন করে। ভবিষ্যত বংশধররা যাতে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত হয় সে ব্যবস্থা আমরা করেছি।

তিনি বলেন, বিএসটিআইকে আমরা আধুনিক করেছি, উন্নত মানের করেছি। কিন্তু খাদ্য পরীক্ষা করার জন্য বিশেষ ল্যাবরেটরি-এটা করা একান্ত প্রয়োজন। সেটা আমরা করে দেব। আমাদের একটা কেন্দ্রীয় ল্যাবরেটরি যেমন থাকবে, সেই সঙ্গে প্রত্যেকটা বিভাগেও একটা শাখা থাকবে। যে কোনো জায়গায়, যে কোনো খাদ্য আমরা সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা করে দেখতে পারি যে সেখানে কোনো রকম ক্ষতিকর কিছু আছে কি-না বা ভেজাল আছে কি-না সেটা আমরা দেখব। এটার ব্যবস্থা আমরা করব। এ ব্যাপারে আমাদের যেটা লক্ষ্য সেটা সুনির্দিষ্ট হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়েছি, পুষ্টিসম্মত নিরাপদ খাদ্যের বিধান করা। সেটা আমরা বাস্তবায়ন করব।

খাদ্য নিরাপত্তায় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের খাদ্য খাওয়ার অভ্যাসে কিছুটা পরিবর্তন করতে হবে। পেট ভরে ভাত খাওয়ার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবারের দিকেও নজর দিতে হবে। কোনো বন্যা বা কোনো কিছু হলে কারও কাছে হাত পাততে হবে না।

এ সময় খাদ্যশস্য উৎপাদন, মাছ-মাংস উৎপাদনের পরিমাণ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমরা যখন ৯৬ সালে ক্ষমতায় আসি তখন দেখি মাত্র দুই ধরনের মাছ চাষ হয়। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের যে বন্ধু-বান্ধব শিক্ষকরা ছিলেন তাদের বললাম আমাদের দেশীয় মাছ নিয়ে গবেষণা করতে। সেই গবেষণার জন্য বরাদ্দ দিয়েছিলাম। এখন অন্যান্য মাছের সঙ্গে মিষ্টি পানির মাছ উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। এ সময় সব বিষয়ে গবেষণা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, দেশকে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তার যে স্বপ্ন ছিল, তিনি সেটা পূরণ করে যেতে পারেননি। অকালে তাকে চলে যেতে হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *