জোড়া খুনের মামলা: রনির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

ঢাকার ইস্কাটনে জোড়া খুনের মামলায় সাবেক সাংসদ পিনু খানের ছেলে বখতিয়ার আলম রনির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মঞ্জুরুল ইমাম এই রায় দেন।

আদালত মামলার ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, সাক্ষীদের সাক্ষ্য, তদন্ত কর্মকর্তাদের তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঘটনার দিন রনি মদ্যপান করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিল পিস্তল। তবে তিনি স্বাভাবিক ছিলেন না। তাঁর শিশু সন্তান হাসপাতালে ভর্তি ছিল। রাতে রনির মাইক্রোবাস মগবাজারের দিকে যায়, এর দশ মিনিটের মাথায় উল্টো পথ দিয়ে আবার ইস্কাটনের দিকে আসে।

রনির গাড়ির চালক ইমরান ফকির ওই দিন তাঁর (বখতিয়ার আলম রনি) সঙ্গে থাকা কামাল মাহমুদ, টাইগার কামাল এবং জাহাঙ্গীর আলম আদালতে ১৬৪ ধারায় সেদিনের ঘটনার জবানবন্দি দেন। সাক্ষীদের সাক্ষ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বখতিয়ার আলম রনি তার পিস্তল দিয়েই গুলি ছোড়েন।

আদালত বলেন, ‘বখতিয়ার আলম রনির পিস্তল থেকে ছোড়া গুলিতে দুটি নিষ্পাপ প্রাণ ঝরে গেছে, এর দায় আসামি এড়াতে পারেন না। তাই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো। ’

এর আগে মামলার একমাত্র আসামি বখতিয়ার আলম রনিকে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কারাগার থেকে আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে রনিকে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়।

এই গুলিতেই রিকশাচালক হাকিম ও সিএনজি অটোরিকশা চালক ইয়াকুব গুলিবিদ্ধ হয়েই হাসপাতালে মারা যান। রায়ে বলা হয়, রনি যে পিস্তল ব্যবহার করেছেন তার লাইসেন্স ছিল কিনা সেই মূল কপি আদালতের কাছে উপস্থাপন করা হয়নি। কতটি গুলি আসামি ব্যবহার করতে পারবেন সেই হিসাবের বিবরণও আদালতের কাছে দেওয়া হয়নি। তবে পুলিশ ২১টি গুলি আসামির কাছ থেকে উদ্ধার করেছিলেন—এ তথ্য উঠে আসে।

আদালতে নিহত রিকশাচালক হাকিম ও সিএনজি অটোরিকশা চালক ইয়াকুবের পরিবারের কাউকে দেখা যায়নি।

২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল গভীর রাতে নিউ ইস্কাটনে একটি গাড়ি থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়া হয়। গুলিতে রিকশাচালক আবদুল হাকিম ও অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ এপ্রিল হাকিম এবং ২৩ এপ্রিল ইয়াকুব মারা যান।

এ ঘটনায় হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম ১৫ এপ্রিল রমনা থানায় মামলা করেন।সূত্রবিহীন এই মামলায় তথ্যপ্রযুক্তি ও দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার (সিসি) সহায়তায় সাংসদ-পুত্রের প্রাডো গাড়ি এবং তাঁর অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গাড়ির সূত্র ধরে একই বছরের ৩০ মে এলিফ্যান্ট রোডের বাসা থেকে রনিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *