মামলা করতে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা

বাংলাদেশে ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চুরির ঘটনায় মামলা করতে আজ যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল। রোববার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন কাদের বিরুদ্ধে এবং কী মামলা করা হবে- তা সেখানে গিয়ে আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশে ব্যাংকের মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বিবিসিকে বলেন, মামলা করার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েই এই দলটা যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে। সেখানে ল’ ফার্মের সঙ্গে আলাপ করে তারা মামলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, নিউইয়র্কের আদালতে ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সহায়তা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশে ব্যাংকের একাউন্ট থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার বা ৮১০ কোটি টাকা চুরি হয়। যদিও সেটি প্রকাশ পায় একমাস পরে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুযায়ী, এ ধরনের ঘটনায় তিন বছরের মধ্যে মামলা না করলে তার গুরুত্ব কমে যায়। ফলে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।

সুইফট কোডের মাধ্যমে ৮১০ কোটি টাকা শ্রীলঙ্কা ও ফিলিপাইনে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ২৭৩ কোটি টাকা ফেরত পাওয়া গেলেও, বাকি ৫৩৭ কোটি টাকা এখনও উদ্ধার হয়নি।

ওই চুরির ঘটনায় আরসিবিসির শাখা ব্যবস্থাপককে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছে ফিলিপাইনের আদালত।

যদিও এরপরে ওই ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং অর্থ ফেরত আনার আশ্বাস দেয়া হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। ঘটনার পরপরই তৎকালীন গর্ভনর আতিউর রহমান পদত্যাগও করেন।

এরপর সাবেক গর্ভনর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠিত হয়, যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। কিন্তু সেই প্রতিবেদন সরকার প্রকাশ করেনি। এই ঘটনার তদন্ত করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি।

তিনি আরও বলেন, সুতরাং আমি মনে করি, এখানে আমাদের কোনো দুর্বলতা নেই। তাই আশা করা যায়, আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করলে আমরা কাঙ্ক্ষিত সফলতা পাব। তবে কতদিনের ভেতর সেই ফলাফল পাওয়া যাবে- তা জানাতে পারেননি তিনি।

যেখানে গত তিন বছরেও তদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের এই আইনি পদক্ষেপ থেকে তাহলে কতটা আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক? এমন প্রশ্নের জবাবে মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেখুন, আমাদের এখানে সিআইডি তদন্ত করেছে। আন্তর্জাতিক মামলা করার জন্য যেসব প্রস্তুতি, সতর্কতা দরকার – তার সবই নেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *