যেভাবে সমাপ্তি হল চীন-মার্কিন বাণিজ্য আলোচনা
চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধের সমঝোতায় গত সোমবার বেইজিংয়ে শুরু হয় দুদিনব্যাপী আলোচনা। পরবর্তীতে আলোচনার সময় আরো একদিন বাড়ানো হয়। গতকাল বর্ধিত আলোচনা শেষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের এক সদস্য জানিয়েছেন, দুপক্ষের মধ্যে আলোচনা ভালো হয়েছে। খবর এএফপি।
গত ১ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্সে তিন মাসের জন্য বাণিজ্যযুদ্ধ বিরতিতে সম্মত হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রধানমন্ত্রী শি জিনপিং। বুয়েন্স আয়ার্সে এ সম্মতির পর এই প্রথম আলোচনায় বসলেন চীনা ও মার্কিন কর্মকর্তারা।
আশা করা হচ্ছিল, বেইজিংয়ের এ আলোচনা থেকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র দুই পক্ষই একটি চুক্তিতে পৌঁছতে সক্ষম হবে এবং এতে দুই দেশের রফতানি পণ্যের ওপর নতুন শুল্ক ঠেকানো সম্ভব হবে। চীন-মার্কিন বাণিজ্য আলোচনার খবরে এশিয়ার শেয়ারবাজারে এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে চাঙ্গাভাব।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সদস্য টেড ম্যাকিনি সাংবাদিকদের জানান, বুধবারের মধ্যেই প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা হবে। আলোচনা বিষয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করি, আমাদের মধ্যে ভালো আলোচনা হয়েছে। ভ্রমণটি আমাদের জন্য বেশ ভালো ছিল।
গত মঙ্গলবার চীন-মার্কিন আলোচনা বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক টুইটে জানান, চীনের সঙ্গে আলোচনা খুব ভালো যাচ্ছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা শেষ হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত করেছে। কিন্তু আলোচনার ফলাফল বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লু ক্যাং জানান, যদি ভালো কোনো ফলাফল আসে, তবে তা শুধু চীন কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই ভালো হবে না, বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্যও সুফল বয়ে আনবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ জেফরি গেরিশের নেতৃত্বে বেইজিংয়ে আসা প্রতিনিধি দলের গত মঙ্গলবারই ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। লু ক্যাং জানান, আলোচনা প্রলম্বিত হওয়ার মানে হলো, দুই পক্ষই আলোচনাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে।
আলোচনা শুরুর দিন অর্থাৎ গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রস সিএনবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে জানান, দুই পক্ষের একটি চুক্তিতে পৌঁছার খুব ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, যেহেতু চীন যুক্তরাষ্ট্রে বেশি পণ্য রফতানি করে, সুতরাং বাণিজ্যযুদ্ধের ফলে তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক সিএনবিসিকে জানান, আমি কিছু উৎসাহব্যঞ্জক শব্দ শুনেছি। আমার মনে হয়, একটি চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। ট্রাম্প প্রশাসনের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, আমি অবশ্যই তাদের পক্ষে কিছু বলিনি, আমি তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং আমার ধারণা ও চিন্তা তাদের জানিয়েছি।
এদিকে চীন-মার্কিন বাণিজ্য আলোচনার মধ্যেই গত মঙ্গলবারে অঘোষিত ভ্রমণে চীনে এসেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। চীন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় কিমের ভ্রমণকে বার্গেনিং চিপ হিসেবে ব্যবহার করা হবে না।