ভালো কোম্পানি টেনে তুলছে শেয়ারবাজার

স্টাফ রিপোর্টার

আবার পতন থেকে বেরিয়ে আসার আভাস দিচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বাড়তে শুরু করেছে। শেয়ারবাজারের এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ভালো কোম্পানি বা ‌‘এ’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান।

সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (১১ মার্চ) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে সবকয়টি মূল্যসূচক। একই সঙ্গে লেনদেন বেড়ে চারশ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে গেছে।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যাক প্রতিষ্ঠান। এতে বাজারটিতে মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে টানা দুই কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকলো শেয়ারবাজার।

এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত সূচকের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকে।

ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ‘এ’ গ্রুপের ২১৮ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১১৫টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ৬১টির এবং ৪২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ‘বি’ গ্রুপের ৩৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। কমেছে ৩৫টি এবং ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১২টির দাম বেড়েছে। অন্যদিকে ৭টির কমেছে এবং ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ‘জেড’ গ্রুপের ৯৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ৪২টির এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ভালো ও মাঝারি মানের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার দিনে লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে ১৮২ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৮টির। এছাড়া ৭৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় এক পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ১৬৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৮৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সবকয়টি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪১২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৩৮ কোটি ৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৭৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে সাত কার্যদিবসের মধ্যে ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।

এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ২৫ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিচ হ্যাচারির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ২০ লাখ টাকার। ১৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাভেলো আইসক্রিম।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, লিন্ডে বাংলাদেশ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, হাক্কানী পাল্প, রবি, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং শাইনপুকুর সিরামিক।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৮টির এবং ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪ কোটি ৯ লাখ টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *