বাণিজ্যমেলায় শেষ মুহূর্তে ভিড়

স্টাফ রিপোর্টার

রাজধানীর অদূরে পূর্বাচলে চলছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৯তম আসর। মেলা শুরু হওয়ার পর কেটে গেছে ৪ সপ্তাহ। শেষ দিকে এসে ব্যস্ততা বেড়েছে বিক্রেতাদের। সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত সময় পার করছেন মেলায় আগত বিদেশি স্টলের ব্যবসায়ীরা।

এবারের আসরে ৭টি দেশের মোট ১১টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। ২০২৩ সালে ১২ দেশের ১৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল। সেই হিসাবে গত দুই বছরের চেয়ে এ বছর বাইরের দেশের অংশগ্রহণ কমেছে। গত বছর ২০২৪ সালে তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, হংকং, ইরান, ভারত, পাকিস্তানসহ ১৬ থেকে ১৮টি বিদেশি প্যাভিলিয়ন ছিল বলে জানানো হয়েছিল মেলা আয়োজকের পক্ষ থেকে।

আর এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলো হলো, ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, ছুটির দিন হওয়ায় প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটেছে। কেউ পরিবার নিয়ে এসেছেন, কেউ আবার একা এসেছেন। সবাই যার যার প্রয়োজনীয় পণ্য যাচাই-বাছাই করছেন, দামাদামি করছেন। মেলার স্টলগুলো ‘হল-এ’  এবং ‘হল-বি’ এ দুই ভাগে বিভক্ত। মূল ভবনের বাইরেও কিছু স্টল আছে।

মেলার মূল ভবনের হল ‘বি’ তে রয়েছে ভারতীয় পণ্যের স্টল। প্রায় ৫০টি স্টলে ভারতীয় পণ্য বিক্রি হতে দেখা গেছে। এরমধ্যে রয়েছে কাশ্মীরি শাল, জুতা, কসমেটিকস, কাপড় ও হস্তশিল্পসহ নানা ভারতীয় পণ্য। এরমধ্যে আবার ‘হল বি’তেই রয়েছে প্রায় ২০টি।

মনোয়ার আহমেদ নামে মেলায় আগত এক দর্শনার্থী বলেন, আমি কাশ্মীরি চাদর খুব পছন্দ করি। ভারতে যাওয়ার সুযোগতো নেই তাই বাণিজ্যমেলায় এসেছি চাদর কিনতে। এবার অনেক ভারতীয় স্টল দেখতে পেলাম। পছন্দ হলে কিনে নিবো।

হল-এ তে কাশ্মীরি চাদর বিক্রি করে এমন ভারতীয় একটি স্টলে কথা হয় বিক্রয়কর্মী মোহাম্মদ কাওসারের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের কাশ্মীরি চাদরের চাহিদা বরাবরই বেশি থাকে। বিশেষ করে হাতে বোনা চাদর, শালের প্রতি ক্রেতার বাড়তি আকর্ষণ থাকে। আমাদের চাদরের দাম ১ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা। প্রতিবার আমাদের প্রায় সব পণ্য বিক্রি হয়ে যায়, কিন্তু এবার হয়তো কিছু পণ্য অবিক্রিত থেকে যাবে।

ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তানি স্টলেও সমান ভিড় দেখা গেছে। বিশেষ করে পাকিস্তানি ড্রেস, জুতা, শাল, চাদর, কার্পেটসহ নানান পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। পাকিস্তান কাশ্মীরি চাদর বিক্রি করছে এমন একটি স্টলে কথা হয় মোহম্মদ আজমের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের চাদরের দাম শুরু হয় ৩০০০ টাকা থেকে। তবে এখনো কাঙ্ক্ষিত বিক্রি হয়নি।

পাকিস্তানি ব্যাগ ও জুতার দোকানেও ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেল। জুতার মধ্যে রয়েছে, নাগরা, জুত্তি, চপ্পল ও স্যান্ডেল। রয়েছে বানজারা ব্যাগ ও মেটাল ব্যাগের দোকান। হাসনা বানু নামে একজন ক্রেতা বলেন, নাতি-নাতনীদের জন্য জুতা কিনতে এসেছি। তারা বায়না ধরেছে পাকিস্তানি জুত্তি পড়বে। নিজের জন্যও এক জোড়া কিনেছি।

ইরানি পণ্য সমাহার স্টলে নানা ধরনের কার্পেট, জায়নামাজ, শোপিছ, মেলামাইন, ক্রোকারিজ ইত্যাদি পণ্য বিক্রি হচ্ছে। মেলায় কথা হয় ইরানি কার্পেট বিক্রেতা মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, গতবারের চেয়ে এবার কার্পেট বিক্রি কমেছে। ক্রেতারা কম দাম বলছেন আমাদের দোকানে সব সাইজের বিভিন্ন ডিজাইনের কার্পেট, জায়নামাজ রয়েছে। ৩ ফুট বাই ৫ ফুট আয়তনের কার্পেটের দাম ২০ হাজার টাকা, আর ৫ ফুট বাই ১০ ফুট আয়তনের কার্পেটের দাম ৯৫ হাজার টাকা।

মেলায় জাপানিজ ইন্সট্যান্ট নুডুলস ব্র্যান্ড নিসসিন স্টলে দেখা যায়, বাহারি রঙের কাপ নুডুলস, স্যুপ বিক্রি হচ্ছে। স্টলের সেলসম্যান রাহাত বলেন, ইন্সট্যান্ট নুডুলসের সব ধরনের ফ্লেভার পাওয়া যাবে আমাদের স্টলে। বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ রয়েছে আমাদের।

মেলায় প্রধান গেট দিয়ে প্রবেশ করতেই ডান পাশে রয়েছে দিল্লি অ্যালুমিনিয়াম প্রিমিয়াম স্টল। স্টিলের বাসনকোসন বিক্রি করছে দিল্লি অ্যালুমিনিয়ামস। দোকানের ভেতরে ছিল ক্রেতাদের ভিড়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *