সরকারের লক্ষ্য পাচার অর্থ উদ্ধারে চুক্তিসহ রোডম্যাপ তৈরি করা
অবৈধভাবে বিদেশে পাচার অর্থ উদ্ধারের প্রচেষ্টা জোরদার করছে বাংলাদেশ। এসব অর্থ বৈধভাবে প্রত্যাবাসনের জন্য সম্ভাব্য দ্বিপক্ষীয় চুক্তিসহ একটি রোডম্যাপ তৈরি করা সরকারের লক্ষ্য। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য বিশ্বব্যাংক, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ সরকারের কর্মকর্তারা এ সপ্তাহে ঢাকা সফর করবেন। আলাদা আলাদাভাবে এ সপ্তাহে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট ও মার্কিন বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা আসবেন। সোমবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বণিক বার্তা আয়োজিত তৃতীয় বাংলাদেশ ইকোনমিক সামিটে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এ কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশ থেকে অর্থ নিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমন্বিত প্রচেষ্টা চলছে। ব্রিটিশ সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের এসটিএআর-এর (স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি) প্রতিনিধিরাও আলোচনায় অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আহসান এইচ মনসুর জানান, পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার সঙ্গে সিঙ্গাপুরকে যুক্ত করতে বাংলাদেশে সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যদি বিদেশে অর্থ পাচার হয়ে থাকে, তাহলে আমরা আমাদের দাবি প্রতিষ্ঠায় কাজ করব। আমরা বৈধ উপায়ে টাকা ফেরত আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
এদিকে দেশ থেকে বিভিন্ন সময়ে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে আন্তর্জাতিক আইনি প্রতিষ্ঠান তথা ল ফার্ম নিয়োগ দেওয়ার কথা জানিয়েছে সরকার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ রোববার এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। শিগগিরই ওই প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হবে। যোগ্য প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহায়তা নেবে বাংলাদেশ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশ থেকে বেশি অর্থ পাচার হয়েছে যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি দেশে। পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে এরই মধ্যে এসব দেশের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলমসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে তাদের বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। এখন সার্বিক সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক আইনি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ হবে। একই সঙ্গে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে আলাদা একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।
নগদে ফরেনসিক অডিট হবে: নিয়মবহির্ভূতভাবে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে কার্যক্রমে আসা নগদে গত ২১ আগস্ট প্রশাসক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রশাসকের আবেদনের ভিত্তিতে ফরেনসিক অডিট করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ। এ অডিটের মাধ্যমে নগদ প্রতিষ্ঠার পর থেকে কী পরিমাণ জাল ই-মানি ছাড়া হয়েছে, শেল কোম্পানির আড়ালে বিদেশি পাঁচ প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ দেখানো, নগদের মালিকানায় ডাক বিভাগের নাম ব্যবহারসহ বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখা হবে।