আরও ৮ মাস সময় চাইলেন গভর্নর মূল্যস্ফীতি কমাতে

স্টাফ রিপোর্টার

যেকোনো পলিসি ইমপ্লিমেন্ট করলেও মূল্যস্ফীতি এক বছরের আগে কোনো দেশেই কমে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কোনো দুর্ভিক্ষ হবে না। আমাদের গ্রোথ কমেনি। চার মাস পার করছি, মূল্যস্ফীতি কমাতে আমাকে আরও ৮ মাস সময় দিতে হবে।

বাংলাদেশে কোনো ধরনের অর্থনৈতিক মন্দা হবে না। কিন্তু দেশে প্রবৃদ্ধির গতি যে কমে গেছে, তা অনিবার্যই ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।

গভর্নর আরও বলেন, ‘আমরা কি শ্রীলঙ্কা হয়ে গেছি, অবশ্যই না; আমাদের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়নি; অর্থনীতিও ধসে পড়েনি। হতে পারত, কিন্তু হয়নি।‘ এ বিষয়ে একধরনের উপলব্ধি থাকতে হবে যে বাংলাদেশ মন্দা এড়াতে পেরেছে। সে জন্য প্রশংসাও থাকা দরকার।

সোমবার (11 Novembor নভেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত তৃতীয় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলন-২০২৪–এ কথাগুলো বলেন আহসান এইচ মনসুর। ‘বৈষম্য, আর্থিক অপরাধ ও বাংলাদেশের অর্থনীতির নিরাময়’ শীর্ষক এ সম্মেলনের আয়োজন করে দৈনিক বণিক বার্তা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনের চেষ্টা করছে। এ বাস্তবতায় দেশে প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কমে যাবে বলে মন্তব্য করেন আহসান এইচ মনসুর। তিনি আরও বলেন, স্থিতিশীলতা অর্জনে ব্যাংক ও ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলোর সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দফায় দফায় আলোচনা করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ বদলানো হয়েছে। নতুন পর্ষদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ আছে। প্রতিদিনই বাংলাদেশ ব্যাংক এই ব্যাংকগুলোর নগদ অর্থপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ করছে। একটি ব্যাংক থেকে ২৩ হাজার কোটি টাকা যদি এক পরিবার নিয়ে যায়, তাহলে সেই ব্যাংকের কী থাকে। এসব ক্ষেত্রে নতুন কিছু করতে হবে।

গভর্নর বলেন, ব্যাংক রেজল্যুশন অ্যাক্ট করা হবে, যার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে সব ক্ষমতা চলে আসবে, আইনগতভাবেই তা হবে। ফলে ব্যাংক একীভূতকরণ, অধিগ্রহণসহ সবকিছুই করা সম্ভব হবে। কিছু ব্যাংকে পুঁজি সঞ্চার করা হবে, কিছু ব্যাংকে নতুন বিনিয়োগ নিয়ে আসতে হবে। এসব করার জন্য আইনি কাঠামো প্রয়োজন; সেই কাজ এখন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ব্যাংকের সম্পদের মান পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাংকিং খাত, এই মন্তব্য করে আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, ‘দেশের আর্থিক খাত সবচেয়ে দুর্বল, এমনকি পাকিস্তানের চেয়েও। আর্থিক খাতের এই দুর্বলতার ছাপ দেশের অর্থনীতিতে পড়েছে। তার জের টানতে হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যে এখন পর্যন্ত ভবিষ্যৎমুখী কিছু করা সম্ভব হয়নি; বরং অতীতের জের টানা ও সংশোধনমূলক কাজ করতে হচ্ছে আমাদের।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, ইনস্টিটিউট অব ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইএনএম) নির্বাহী পরিচালক মুস্তাফা কে মুজেরী, ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাভেদ আখতার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক সায়মা হক।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *