পদত্যাগ করেছেন এসআইবিএলের এমডি ও দুই ডিএমডি

স্টাফ রিপোর্টার

এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হওয়ার পর সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের (এসআইবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাফর আলম পদত্যাগ করেছেন। একই সঙ্গে পদত্যাগ করেছেন ব্যাংকটির দুই উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান ও খোরশেদ আলম। তাঁরা তিনজনই এস আলম গ্রুপের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ ২০১৭ সালে এসআইবিএলের মালিকানায় আসে। তারপর এই তিনজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ব্যাংকটির দায়িত্বে আসেন। তাঁদের মধ্যে দুজন ছিলেন ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা; আরেকজন এসেছিলেন ভিন্ন আরেকটি ব্যাংক থেকে।

পদত্যাগী এমডি জাফর আলম বলেন, তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ নন। এ ছাড়া তাঁর নিয়োগের মেয়াদ আগামী ডিসেম্বর মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এই বাস্তবতায় তিনি বুধবার (সেপ্টেম্বর ৪) পদত্যাগ করেছেন। তবে দুজন উপব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।

জাফর আলম আরও বলেন, তিনি নিজ থেকে কোনো ঋণ অনুমোদন করেননি; যেসব ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে, সেগুলো পরিচালনা পর্ষদ করেছে। এই দায় তাঁর নয়। এস আলম গ্রুপের কোনো ঋণের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা ছিল না। এস আলম গ্রুপ প্রথমে তাঁকে কমার্স ব্যাংকে নিয়ে আসে; সেখান থেকে পরবর্তীকালে তাঁকে এসআইবিএলের আনা হয়। তাঁর দাবি, কোনো ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে তিনি জড়িত নন।

৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলমের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার লক্ষ্যে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়। একজন উদ্যোক্তা শেয়ারধারীকে পরিচালক ও চারজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করে বাংলাদেশ ব্যাংক বেসরকারি এই ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করে দেয়। একই সঙ্গে আগের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করা হয়।

২০১৭ সালে এসআইবিএলের মালিকানা পরিবর্তনের সময় কয়েকজন উদ্যোক্তা ও পরিচালককে বাদ দেওয়া হয়। এরপর ব্যাংকটি থেকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ টাকা বের করে নেওয়া হয়। যে কারণে ব্যাংকটি ইতোমধ্যে আর্থিক সংকটে পড়েছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত চলতি হিসাবেও ঘাটতিতে আছে।

এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাদের মালিকানাধীন আর্থিক প্রতিষ্ঠান আভিভা ফাইন্যান্সের পর্ষদও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, যাঁরা ব্যাংকের টাকা নিয়ে ফেরত দেননি, তাঁদের ছাড় দেওয়া হবে না। টাকা উদ্ধারে আইনগত যত পন্থা আছে, সবই অনুসরণ করা হবে। দুর্বল ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে অনেকগুলো ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *