অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর পরিকল্পনা চীনে

স্টাফ রিপোর্টার

চাকরিজীবীদের অবসরে যাওয়ার বয়সসীমা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে চীন। এ পরিকল্পনার পেছনে কিছু আর্থসামাজিক কারণ রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন, সাম্প্রতিক দশকে চীনে গড় আয়ু বেড়েছে। এতে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর দেখাশোনায় বাড়তি খরচ হচ্ছে। অন্যদিকে পেনশন তহবিলের জন্য পর্যাপ্ত অর্থের সংকট দেখা দিয়েছে। খবর সিএনএন।

বর্তমানে চীনের শহরাঞ্চলের একজন পুরুষ চাকুরে ৬০ বছর বয়সে অবসরে যেতে পারেন এবং রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে পেনশন পেয়ে থাকেন। অন্যদিকে কাজের ধরনভেদে নারীদের ক্ষেত্রে অবসরের বয়সসীমা ৫০-৫৫ বছরের মধ্যে ওঠানামা করে। তবে চীনের গ্রামাঞ্চলে কর্মজীবীদের ক্ষেত্রে মানা হয় ভিন্ন পেনশন ব্যবস্থা।

গত সপ্তাহে দেশটির রাজধানী বেইজিংয়ে শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের অংশগ্রহণে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর কিছু সংশোধনসহ পরিকল্পনাটি প্রস্তাব আকারে প্রকাশ করা হয়।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, চাকরিজীবীদের প্রতিষ্ঠানের বিধিমোতাবেক অবসরে যাওয়ার বয়স বাড়ানো হবে। এজন্য একটি সুশৃঙ্খল প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।

কমতে থাকা জন্মহার ও বয়স্ক জনসংখ্যা বৃদ্ধি চীনের অর্থনীতির জন্য অন্যতম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ থেকে উদ্ভূত অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবেলায় দেশটির নীতিনির্ধারকরা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অবসরে যাওয়ার বয়স বাড়ানোর কথা বলে আসছেন। ২০১৩ সালে পার্টির বৈঠকে এ পরিকল্পনাকে বেশ গুরুত্ব দেয়া হয়। এর আট বছর পর কভিড-১৯ মহামারীর সময় চীনের মন্ত্রিসভা পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অবসরের বয়স সম্পর্কিত নীতি অন্তর্ভুক্ত করে। এ থেকে অনুমান করা যায়, এ-সংক্রান্ত পরিবর্তন ২০২৫ সালের আগে শুরু হতে পারে।

এর আগে সরকারি গবেষণা সংস্থা চাইনিজ একাডেমি অব সোশ্যাল সায়েন্সেস গত ডিসেম্বরে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, পর্যায়ক্রমে সবাই ৬৫ বছর বয়সে অবসরে যাবেন। সংস্থাটি ২০১৯ সালে তাদের পূর্বাভাসে বলেছিল, ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনের রাষ্ট্রীয় পেনশন তহবিলের ভাণ্ডার একদম শূন্য হয়ে যাবে।

চীনের জনসংখ্যা দুই বছর ধরে সংকুচিত হচ্ছে। ১৯৪৯ সালে কমিউনিস্ট চীন প্রতিষ্ঠার পর ২০২৩ সাল ছিল সর্বনিম্ন জন্মহারের বছর। গত বছর বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে ভারত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *