বেগুন বরবটি গাজর টমেটো একশ টাকা ছাড়াল
বৃষ্টির অজুহাতে বেজায় চড়েছে সবজির বাজার। ৫০ টাকার কমে কোনো সবজি মিলছে না। কয়েকটি সবজির দর শতক হাঁকিয়েছে, অন্যগুলো শতকের কাছাকাছি। এ ছাড়া আবারও ৩০০ টাকা অতিক্রম করেছে কাঁচামরিচের দাম, ঢাকার বাইরে কোথাও কোথাও ৪০০ টাকাও ছুঁয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্যা ও ভারী বৃষ্টির কারণে রাজধানীতে সবজির সরবরাহ কমেছে। উৎপাদনও ব্যাহত হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে।
এক দিনের বৃষ্টিতেই ২০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে কিছু সবজির দাম। দু-তিন দিন আগেও ঢাকার বাজারে ১৮০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে কাঁচামরিচ। শনিবার রাজধানীর শান্তিনগর, বাড্ডা, হাতিরপুল ও কারওয়ান বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়।
সবজির মধ্যে করলা, বেগুন, বরবটি, গাজর ও টমেটোর দাম শতক অতিক্রম করেছে। মানভেদে করলা ও বরবটির কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, বেগুন ১১০ থেকে ১২০, টমেটো ১৩০ থেকে ১৬০ এবং গাজর ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঝিঙা-ধুন্দলের কেজিতে গুনতে হচ্ছে ৭০ থেকে ৯০ টাকা। লতি ও কচুরমুখির কেজিও ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এ ছাড়া পটোল ও ঢ্যাঁড়শ ৬০ থেকে ৭০ টাকা ও পেঁপের কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করছেন ছোট ব্যবসায়ীরা।
আকারভেদে প্রতিটি লাউয়ের দাম ৭০ থেকে ১০০ টাকা, জালিকুমড়া ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, মিষ্টিকুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সবজির দর বাড়ার কারণে শাকের দরও ঊর্ধমুখী। লাউ ও পুঁইশাকের আঁটি কিনতে ক্রেতাদের খরচ করতে হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আর লালশাক ও কলমিশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। আলুর বাজারে কমার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। আগের মতোই প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। একই পরিস্থিতি পেঁয়াজের বাজারে। কেজিপ্রতি দাম রাখছেন ব্যবসায়ীরা ১১০ থেকে ১২০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের সবজির আড়তদার দুলাল হোসেন বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টানা বৃষ্টি ছিল ঢাকায়। যেসব জেলায় সবজি উৎপাদন হয়, সেসব এলাকায় প্রায় প্রতিদিন থেমে থেমে বৃষ্টি হয়। এ কারণে ঢাকায় সবজির সরবরাহ কম। তিনি বলেন, দাম পুরোপুরি নির্ভর করে সরবরাহের ওপর। সবজি বেশি এলে দাম কমে যায়, আবার সরবরাহ কম হলে বেড়ে যায়।
রাজবাড়ীতে ৪০০ টাকা ছুঁয়েছে মরিচ রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, গতকাল সেখানে এক দিনের ব্যবধানে কেজিতে ১০০ টাকা বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। মানভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৬০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। রাজবাড়ীর আড়তদাররা বলছেন, ভারত থেকে আমদানি না হওয়ায় দাম বেড়েছে। যদিও জেলার কৃষি বিপণন কর্মকর্তারা বলছেন, বৃষ্টির অজুহাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছেন।
রাজবাড়ী আড়তপট্টির আড়তদার মোস্তাক হোসেন জানান, শুক্রবার তারা ২০০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি দরে কাঁচামরিচ বিক্রি করেছেন। শনিবার বিক্রি করছেন ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়। স্বাভাবিকভাবেই খুচরা বিক্রেতারা আরও বেশি দাম নিচ্ছেন। তিনি জানান, মরিচের আমদানি নেই বললেই চলে। স্থানীয়ভাবে সাধারণত ১০০ থেকে দেড়শ কেজি কাঁচামরিচ কেনেন প্রতিদিন। শনিবার সারাদিনে মাত্র ২০ কেজি কিনতে পেরেছেন।
শৈলকুপায় পেঁয়াজের মণে বেড়েছে ৬০০ টাকা পর্যন্ত
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, দেশের অন্যতম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী এলাকা ঝিনাইদহের শৈলকুপার পাইকারী বাজারে দেশি পেঁয়াজের বেড়েছে ঝাঁজ। গতকাল শৈলকুপা শহরের পেঁয়াজের পাইকারি হাট ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজের মণ বিক্রি হচ্ছে ৪১০০-৪২০০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা জানান, গত চার দিনে পাইকারি বাজারে মণে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বেড়েছে।
পেঁয়াজ আমদানিকারক ইয়াদুল ইসলাম বলেন, এলসির পেঁয়াজ কম আসায় দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আমদানি পেঁয়াজে ব্যবসায়ীদের লাভ কম হওয়ায় বিদেশ থেকে কম আসছে।