প্রথম প্রান্তিকে নিট মুনাফা কমেছে সৌদি আরামকোর

স্টাফ রিপোর্টার

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) আয় ও নিট মুনাফা ঘোষণা করেছে জ্বালানি জায়ান্ট সৌদি আরামকো। এ সময় ২০২৩ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় নিট মুনাফা কমেছে প্রায় ১৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ। তবে গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) তুলনায় বেড়েছে ২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। খবর আরব নিউজ।

রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, মার্চে শেষ হওয়া প্রান্তিকে আরামকো নিট মুনাফা করেছে ২ হাজার ৭২৭ কোটি ডলার, যা পূর্বাভাসের তুলনায় কম। বিশ্লেষকরা ৩ হাজার ১৯০ কোটি ডলার মুনাফার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।

এ সময়ে কোম্পানিটি আয় করেছে ১০ হাজার ৭২১ কোটি ডলার। এর মধ্যে মোট পরিচালন আয় ৫ হাজার ৮৮৮ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

প্রথম প্রান্তিকের প্রবৃদ্ধির প্রতিবেদন প্রকাশ করে কোম্পানির সার্বিক অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন সৌদি আরামকোর প্রেসিডেন্ট ও সিইও আমিন এইচ নাসের। বৈশ্বিক জ্বালানির বাজারে নিজের অবস্থান নিয়ে আশাবাদও প্রকাশ করেন তিনি। নাসের বলেন, ‘প্রথম প্রান্তিকের কার্যক্রমে আরামকোর স্থিতিশীলতা ও শক্তিমত্তা প্রতিফলিত হয়েছে। এ আয় অর্থনীতি, শিল্প ও জ্বালানি সরবরাহকারী হিসেবে বিশ্বব্যাপী আমাদের শক্তিশালী অবস্থানকে দেখিয়ে দিয়েছে।’

আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় গত প্রান্তিকে আরামকোর নিট মুনাফা কমেছে ১৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ। বছরওয়ারি আয় কম হওয়া সত্ত্বেও প্রথম প্রান্তিকের জন্য ২ হাজার ৩০ কোটি ডলার বেস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে আরামকো। এছাড়া পারফরম্যান্স-ভিত্তিক লভ্যাংশ হিসেবে আরো ১ হাজার ৮০ কোটি ডলার বিতরণ করা হবে। আরো জানিয়েছে, বছরজুড়ে ১২ হাজার ৪৩৯ কোটি ডলার লভ্যাংশ আশা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ওপেক প্লাস-বহির্ভূত অন্যান্য দেশের জ্বালানি তেল উত্তোলন বৃদ্ধি ও প্রধান অর্থনীতিগুলোয় উচ্চ সুদহারের কারণে ২০২৩ সাল উদ্বেগ নিয়ে শেষ করে সৌদি আরব। এ কারণে গত বছরের শেষ থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলনে কাটছাঁটের সিরিজ বাস্তবায়ন করছে আরামকো।

চলতি বছরে এখন পর্যন্ত অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের গড় মূল্য ব্যারেল প্রতি প্রায় ৮৩ দশমিক ৫০ সেন্ট হয়েছে। কিন্তু সৌদি আরবের ২০২৪ সালের বাজেটের ভারসাম্য বজায় রাখতে ৯৬ ডলার ২০ সেন্ট দর প্রয়োজন বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। জ্বালানি তেলের মূল্যে কাটছাঁট সৌদি আরবের বাজেটে প্রভাব পড়বে। এ বছর দেশটিতে ২ হাজার ১০৭ কোটি ডলার বাজেটের ঘাটতি হতে পারে। এ কারণে একাধিক মেগা প্রকল্পের কিছু অংশ বিলম্বিত করতে পারে।

আরামকোর প্রায় ৮২ দশমিক ২ শতাংশ সৌদি সরকারের। এছাড়া বড় অংকের রয়্যালটি ও কর পেয়ে থাকে। বিশ্বের বৃহত্তম তেল রফতানিকারক দেশটি সাম্প্রতিক বছরে জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভর অর্থনীতি থেকে বের হয়ে আসতে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করছে। এসব পদক্ষেপে আরামকোর ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *