দ্রুত নিত্যপণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে আসবে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে আনতে সমন্বিতভাবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবাই মিলে সমন্বয় করবে। দ্রুতই নিত্যপণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে চলে আসবে।’ গতকাল রাজধানীর টিসিবি ভবনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি বিপণন অধিদপ্তর পণ্যের একটা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। প্রাইস ডিসকভারিটা হুট করে হয় না। আমাদের দায়িত্ব হবে উৎপাদক পর্যায় থেকে পাইকারি এবং পরে খুচরা পর্যায় পর্যন্ত বাজার মনিটর এবং এটা প্রতিষ্ঠিত করা। আপনি যখন যৌক্তিক পর্যায়ে দাম নির্ধারণ করবেন, সঙ্গে সঙ্গে এটি বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। আগে এটা নির্ধারণ করা জরুরি ছিল। অনেকদিন ধরে আইনটা ছিল কিন্তু করা হয় নাই। এখন সমন্বিতভাবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিদপ্তর, ইউএনও ও ডিসি সবাই মিলে সমন্বয় করবে। আশা করি এটা একটা যৌক্তিক পর্যায়ে চলে আসবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যেখানে যাচ্ছি সেখানেই বাজার কমিটিকে নিয়ে বসছি, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসছি, তাদের উৎসাহিত করছি। তাদের সমস্যার সমাধান করে এটা (সঠিক দামে পণ্য বিক্রি) আমরা বাস্তবায়ন করছি। আমরা কোনো জায়গায় কোনো দোকান বন্ধ করে দিচ্ছি না বা তালাবদ্ধ করে দিচ্ছি না। পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে যখন বিক্রি করতে হবে, তখন আপনাকে (ব্যবসায়ী) রিসিটটা রাখতে হবে। আপনি যখন পাইকারি চালান করবেন তখন রিসিট দিতে হবে। এ জিনিসগুলোকে বলে একেবারে মিনিমাম কমপ্লায়েন্স। এ জিনিসগুলো না করলে আমরা শাস্তির আওতায় আনব।’

এর আগে টিসিবি ভবনের অডিটরিয়ামে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রতিমন্ত্রী। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষসহ মন্ত্রণালয় এবং এর অধীনস্থ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, কৃষক, উৎপাদক, কৃষি ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের সহায়ক হিসেবে এবং কৃষি বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সংসদে কৃষি বিপণন বিল পাস করা হয়। পরে ১ অক্টোবর গেজেট হলে তা আইনে রূপ পায়। তবে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় আইনটি বাস্তবায়ন করা যাচ্ছিল না। সাড়ে তিন বছরের মাথায় ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর ‘কৃষি বিপণন বিধিমালা’ প্রণয়ন করে কৃষি মন্ত্রণালয়। তার আগের বছর থেকে কৃষিপণ্যের ‘যৌক্তিক মূল্য’ প্রকাশ করে আসছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ তালিকায় পাইকারি দরের তথ্য দেয়া হয়। যদিও বাস্তবে যৌক্তিক মূল্য বাস্তবায়ন করতে পারেনি সরকার।

কৃষি বিপণন বিধিমালা ২০২১ অনুযায়ী উৎপাদন, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে পণ্যভেদে মুনাফার সর্বোচ্চ হার বেঁধে দেয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী সবশেষ ১৫ মার্চ গরুর মাংসসহ ২৯টি পণ্যের যৌক্তিক দাম প্রকাশ করেছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। সে অনুযায়ী প্রতি কেজি গরুর মাংসের সর্বোচ্চ খুচরা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৬৪ টাকা। এছাড়া ছাগলের মাংসের দাম ১ হাজার ৩ টাকা বেঁধে দেয়া হয়। আর মাছের মধ্যে চাষের পাঙাশের খুচরা দাম ১৮১ টাকা ও কাতলা মাছের দাম সর্বোচ্চ ৩৫৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্রয়লার মুরগি ১৭৫ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৬২ টাকা দরে কিনতে পারবেন ক্রেতারা। এছাড়া প্রতি পিস ডিমের দাম হবে সর্বোচ্চ সাড়ে ১০ টাকা। মোট ২৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেও সেটি বাজারে মানা হচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *