৮০ টাকার ক্যাটামিন ইনজেকশন ২০০ টাকা
অস্ত্রোপচার ও এর পরবর্তী সময়ে ব্যথা কমানোর জন্য অত্যন্ত কার্যকর একটি ইনজেকশন হচ্ছে ক্যাটামিন। কিন্তু সরবরাহ সংকটে বাজারে অস্বাভাবিক দামে বিক্রি হচ্ছে ইনজেকশনটি। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে কাঁচামাল আমদানির ছাড়পত্র পেতে অনেক সময় লেগে যাওয়ায় বাজারে সরবরাহ ঘাটতি তৈরি হয়েছে। তবে শিগগিরই এ সংকট দূর হবে।
রাজধানীর পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকার ওষুধ বিক্রেতারা জানান, দেশে পপুলার, ইনসেপ্টা, রেনেটা ও গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস ক্যাটামিন ইনজেকশন উৎপাদন করে। সরবরাহ সংকটে বর্তমানে বাজারে ৮০-১১৫ টাকার ইনজেকশনটি ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে উৎপাদনকারী চার প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত ইনজেকশনটি ভিন্ন ভিন্ন দামে বিক্রি করে। গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস তাদের উৎপাদিত জি ক্যাটামিন ৫০ এমজির প্রতিটি ইনজেকশনের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) ৮০ টাকা, পপুলার ফার্মার ক্যাটালার ৫০ এমজির এমআরপি ১১৫, ইনসেপ্টার ক্যাটারিডের এমআরপি ১১৫ ও রেনেটা কেইন ইনজেকশন প্রতি ভায়াল এমআরপি ১০০ টাকা। কিন্তু সরবরাহ ঘাটতির কারণে দোকানিরা তাদের ইচ্ছামতো দামে ইনজেকশনটি বিক্রি করছেন। কোথাও ২০০ টাকা আবার কোথাও ২৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) পরিচালিত মহানগর জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ও অ্যানেসথেসিওলজিস্ট ডা. আজমল হোসেনবলেন, ছোটখাটো দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের ক্যাটামিন ইনজেকশনের মাধ্যমে অস্ত্রোপচার করা হয়ে থাকে।
এছাড়া যেসব হাসপাতালে অ্যানেসথেসিয়ার ব্যবস্থা নেই, সেখানে ক্যাটামিন ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে এ ওষুধের মাত্রা বেশি প্রয়োগ করা হলে রোগীর জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ক্যাটামিন ইনজেকশনটি এসেনশিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) তৈরি করে না। এটি অন্য কোম্পানি থেকে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে কেনা হয়ে থাকে। ক্যাটামিন ইনজেকশন কেনার জন্য প্রতি বছরই দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু কেউ অংশগ্রহণ না করায় তারা ইনজেকশনটি কিনতে পারছেন না। এজন্য তারা অ্যানেসথেসিয়া দেয়ার জন্য বিকল্প হিসেবে ওষুধ সংগ্রহ করে থাকেন।
জানতে চাইলে গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের নির্বাহী পরিচালক (অর্থ) মীর আব্দুল নকীব বলেন, কাঁচামাল সংকটের কারণে দীর্ঘ এক বছর ধরে তারা জি ক্যাটামিন ইনজেকশনটি উৎপাদন করতে পারছিলেন না। তবে সম্প্রতি তারা কাঁচামাল আমদানির অনুমোদন পেয়েছেন। এ ইনজেকশন বাজারে আসতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পপুলার ফার্মার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অধীনে যেসব ওষুধের কাঁচামাল আমদানির অনুমোদন নিতে হয়, তা পেতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়। এ কারণে বাজারে সরবরাহ সংকট থাকতে পারে। তবে তাদের কোম্পানির ওষুধ বাজারে রয়েছে বলে জানান তিনি।