পাঁচদিনে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের দাম কমলো ৭৮ কোটি টাকা

স্টাফ রিপোর্টার

কিছুদিন আগে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লেও এখন ধারাবাহিকভাবে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের শেয়ার দাম কমেছে। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে। এতে পাঁচদিনেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে প্রায় ৭৮ কোটি টাকা কমে গেছে।

গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দাম কমলেও সব থেকে বেশি কমেছে এই কোম্পানিটির। বিনিয়োগকারীদের বড় অংশই এই প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনতে খুব একটা আগ্রহী না হওয়ায় সপ্তাহজুড়েই দাম কমেছে। ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম কমার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস।

গত সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমেছে ১৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ৬ টাকা ৫০ পয়সা। এতে এক সপ্তাহেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম সম্মিলিতভাবে কমেছে ৭৭ কোটি ৮৭ লাখ ৫ হাজার টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দাম দাঁড়িয়েছে ২৬ টাকা ৮০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ছিল ৩৩ টাকা ৩০ পয়সা।

এখন এমন দরপতন হলেও এর আগে দফায় দফায় কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ে। গত ১ অক্টোবর কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ১১ টাকা ১০ পয়সা। এরপর থেকে কোম্পানিটির শেয়ার দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে। দফায় দফায় বেড়ে প্রতিটি শেয়ারের দাম ৩৩ টাকা ৩০ পয়সা পর্যন্ত উঠে। এরপর এখন কোম্পানিটির শেয়ার দাম কমতে দেখা যাচ্ছে।

কোম্পানিটির শেয়ার দাম অস্বাভাবিক বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসই থেকে কয়েক দফা বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করা হয়। তারপরও কোম্পানিটির শেয়ার দাম লাফিয়ে লাফেয়ে বাড়ে। সর্বশেষ শেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটি লোকসানে রয়েছে। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১৫ পয়সা।

লোকসানের পাশাপাশি কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের নিয়মিত লভ্যাংশ দেয় না। ২০১৯ সালের পর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। সর্বশেষে ২০১৯ সালে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। তার আগে ২০১৮ সালে ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার এবং ২০১৭ ও ২০১৬ সালে ১০ শতাংশ করে বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।

২০১৩ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১১৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আর শেয়ার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৮ লাখ ৮৪৪টি। এর মধ্যে ২৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫৬ দশমিক ১০ শতাংশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৮ দশমিক ১ শতাংশ।

এদিকে দাম কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৮৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।

সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের পরেই গত সপ্তাহে দাম কমার তালিকায় ছিল এপিএসসিএল (আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন লিমিটেড) নন-কনভার্টেবল অ্যান্ড ফুল্লি রিডিমেবল কুপন বেয়ারিং বন্ড। সপ্তাহজুড়ে এই বন্ডের দাম কমেছে ১৮ দশমিক ৫২ শতাংশ। ১৬ দশমিক ৯০ শতাংশ দাম কামার মাধ্যমে পরের স্থানে রয়েছে এএফসি এগ্রো।

এছাড়া গত সপ্তাহে দাম কমার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা- ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ, বিডি থাই অ্যালুমেনিয়ামের ১৫ শতাংশ, মিথুন নিটিংয়ের ১৪ দশমিক ৯১ শতাংশ, প্রাইম টেক্সটাইল স্পিনিংয়ের ১৩ দশমিক ৫২ শতাংশ, মুন্নু ফেব্রিক্সের ১৩ দশমিক ১৭ শতাংশ, অ্যাকটিভ ফাইনের ১২ দশমিক ৭৬ শতংশ এবং ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকোর ১২ দশমিক ৬৯ শতাংশ দাম কমেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *