৪২ বিলিয়ন ডলার রফতানির লক্ষ্য

স্টাফ রিপোর্টার

২০৩২ সালের মধ্যে দেশের নন-কটন পোশাক রফতানি ৪২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে চায় বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে নতুন করে ১৮ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রয়োজন। গতকাল বিজিএমইএ ‘‌বিয়ন্ড কটন: আ স্ট্র্যাটেজিক ব্লুপ্রিন্ট ফর ফাইবার ডাইভারসিফিকেশন ইন বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানিয়েছে বিজিএমইএ।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, গত তিন বছরের ব্যবধানে দেশের নন-কটন পোশাক পণ্য রফতানি বেড়েছে ৪ শতাংশ। ২০১৭ সালে মোট পোশাক রফতানিতে নন-কটন পোশাকের মার্কেট শেয়ার ছিল ২৫ শতাংশ। ২০২২ সালে তা দাঁড়িয়েছে ২৯ শতাংশে।

গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-২২ সাল পর্যন্ত নন-কটন পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশের সিএজিআর (কম্পাউন্ড অ্যানুয়াল গ্রোথ রেট) ১০ শতাংশ। ২০১৭ সালে নন-কটন পোশাক রফতানি ছিল ৯ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২২ সালে ১৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে এসে পৌঁছেছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, নতুন ১৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন প্রয়োজন হবে ইয়ার্ন ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে। আর ফ্যাব্রিক ম্যানুফ্যাকচারিং ও গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে ব্যবহৃত হবে যথাক্রমে ৯ দশমিক ২ ও ৪ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। এর মাধ্যমে নন-কটন পোশাক পণ্যের টেকসই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা সহজ হবে এবং আমদানির ওপর নির্ভরতা কমবে বাংলাদেশের।

গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন ভারতভিত্তিক ব্যবসা পরামর্শদাতা সংগঠন ওয়াজির অ্যাডভাইজার প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবসায়িক পরিচালক ভরুন ভেইড। তিনি বলেন, ‘‌ভিশন ২০৩২ অর্জনে নন-কটন শিল্পের জন্য বাংলাদেশের একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন, যেখানে প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা ও সক্ষমতার মৌলিক চ্যালেঞ্জগুলোকে চিহ্নিত করে কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হবে।’

বিজিএমইএর দেয়া তথ্যমতে, ভোক্তা পর্যায়ে ব্যবহৃত বৈশ্বিক পোশাকের ৭৫ শতাংশ নন-কটন ফ্যাব্রিকের ওপর নির্ভরশীল। আর এ খাতের বৈশ্বিক বাণিজ্যের ৫৭ দশমিক ৫০ শতাংশই তৈরি হয় নন-কটন থেকে। বিপরীতে পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশ এখনো তুলানির্ভর। রফতানীকৃত পোশাকের মাত্র ২৯ শতাংশ আসে নন-কটন থেকে। এর মধ্যে গত তিন বছরে এতে প্রবৃদ্ধি এসেছে ৪ শতাংশ। এ পণ্যের বৈশ্বিক রফতানির মাত্র ৫ শতাংশ সরবরাহ করে বাংলাদেশ।

গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। পোশাক শিল্প থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‌বিগত ৪৫ বছরে আমাদের শিল্পটি ৪৭ বিলিয়ন ডলারের একটি রফতানি খাতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববাজারে আমাদের শেয়ার ৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ২০৩০ সাল নাগাদ এ শেয়ার ১২ শতাংশে উন্নীত করতে চাই আমরা। সেজন্য নন-কটন খাতকে সম্প্রসারণের সুযোগ আমাদের নিতে হবে। অন্যথায় লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে না।’

নন-কটন খাতে বাংলাদেশকে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‌প্রতিবেশী দেশগুলো পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পে এগিয়ে থাকায় তারা কম দামে নন-কটন উপকরণ দিয়ে তৈরি পোশাক সরবরাহ করতে পারে। যেখানে আমাদের নিজস্ব কাঁচামাল না থাকায় আমদানি করতে হয়। ফলে নন-কটন রফতানি করতে খরচ বেশি পড়ে। তাই এক্ষেত্রে সরকারের নীতিগত সহায়তা প্রয়োজন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *