মালয়েশিয়ায় পাম অয়েলের মজুদ ছয় মাসের সর্বনিম্নে

স্টাফ রিপোর্টার

মালয়েশিয়ায় স্থিতিশীল রফতানির বিপরীতে নিম্নমুখী উৎপাদন পাম অয়েলের মজুদ পরিস্থিতিতে চাপের মুখে ফেলেছে। জানুয়ারিতে টানা তৃতীয় মাসের মতো পণ্যটির মজুদ কমে ছয় মাসের সর্বনিম্নে। খবর ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে।

মালয়েশিয়ান বাজার আদর্শ পাম অয়েলের গড় দাম গত বছর ১০ শতাংশ কমে গিয়েছিল। তবে সম্প্রতি নিম্নমুখী মজুদের কারণে দাম ফের বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল বুরসা মালয়েশিয়া ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জে পণ্যটির দাম আগের দিনের তুলনায় ৪৫ রিঙ্গিত বা ১ দশমিক ১৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি টনের মূল্য স্থির হয়েছে ৩ হাজার ৯৪৬ রিঙ্গিতে।

মালয়েশিয়ান পাম অয়েল বোর্ড সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানায়, জানুয়ারি শেষে দেশটিতে পাম অয়েলের মজুদ দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ২০ হাজার টনে, যা আগের মাসের তুলনায় ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ কম।

বোর্ড আরো জানায়, গত মাসে মালয়েশিয়ায় অপরিশোধিত পাম অয়েল উৎপাদন আগের মাসের তুলনায় ৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ কমেছে। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ টনে, যা এপ্রিলের পর সর্বনিম্ন। অন্যদিকে এক মাসের ব্যবধানে রফতানি দশমিক ৮৫ শতাংশ কমে ১৩ লাখ ৫০ হাজার টনে নেমেছে।

বিশ্লেষকরা জানান, গত মাসে মালয়েশিয়ার পাম অয়েল রফতানি প্রায় অপরিবর্তিত ছিল। কিন্তু এর বিপরীতে উৎপাদন কমে নয় মাসের সর্বনিম্নে। এ কারণে মজুদ থেকে রফতানি চাহিদা মেটাতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের।

সাম্প্রতিক সময়ে সয়াবিন ও সূর্যমুখী তেলের সরবরাহ বাড়ার পাশাপাশি দাম কমে যাওয়ায় পাম অয়েলের চাহিদা কমছে। পাম অয়েল ক্রেতারা দামের সুবিধা নিতে প্রতিদ্বন্দ্বী এসব তেলের বাজারে ঝুঁকছেন। এতে পাম অয়েলের বৈশ্বিক মূল্য পুনরুদ্ধার ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

গত বছর মালয়েশিয়ান বাজার আদর্শ পাম অয়েলের গড় দাম প্রায় ১১ শতাংশ কমে গিয়েছিল। তবে চলতি বছরের শুরুতে এর বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ।

পাম অয়েলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী পণ্য সয়াবিন তেল। সাধারণত বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের চেয়ে কম দামেই পাম অয়েল ‍বিক্রি হয়। কিন্তু বাজারে বর্তমানে এ প্রবণতার বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে। বাজার পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোয় রেকর্ড পরিমাণ সয়াবিন তেল উৎপাদন হয়েছে। ফলে এক বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো পাম অয়েলের চেয়েও কম দামে মিলছে সয়াবিন তেল। ফলে ব্যবসায়ীরা এর ক্রয় বাড়াচ্ছেন।

তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে ১ কোটি ৫১ লাখ টন পাম অয়েল রফতানি করেছিল মালয়েশিয়া। এ বছর তা কিছুটা বেড়ে ১ কোটি ৫৬ লাখ টনে পৌঁছতে পারে। প্রতি টনের মূল্য ৩ হাজার ৯০০ থেকে ৪ হাজার ২০০ রিঙ্গিতের মধ্যে ওঠানামা করতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *