শেয়ারবাজারে বড় দরপতন

স্টাফ রিপোর্টার

ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর প্রথম কার্যদিবসে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। তবে লেনদেনের শুরুর তুলনায় শেষদিকে বিক্রির চাপ কম থাকায় বড় ধরনের ধসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে শেয়ারবাজার।

শেয়ারবাজারে অব্যাহত দরপতন দেখা দিলে ২০২২ সালের জুলাই মাসে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দামে ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

ফ্লোর প্রাইসের কারণে লেনদেনের গতি আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে বিভিন্ন পক্ষ কঠোর সমালোচনা করতে থাকে। এর প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শেয়ারবাজার থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত কথা জানায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩৫ প্রতিষ্ঠানে ফ্লোর প্রাইস রেখে বাকি সব প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়। রোববার থেকে এটি কার্যকর হয়েছে। ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ায় পর শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের বিপুল বিক্রির চাপ আসে।

এতে লেনদেন শুরু হতেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক প্রায় দুইশ পয়েন্ট কমে যায়। লেনদেনের ১০ মিনিটে মধ্যে ডিএসইর প্রধান সূচক কমে ২১৪ পয়েন্ট। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বড় ধসের আতঙ্ক পেয়ে বসে।

তবে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর বিক্রির চাপ কিছুটা কমে আসে। এতে দাম কমার তালিকা থেকে বেরিয়ে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। সেই সঙ্গে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের দাম কমার মাত্রা কমে আসে।

ফলে বড় ধরণের ধসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে শেয়ারবাজার। অবশ্য এরপরও প্রধান মূল্যসূচকের বড় পতন হয়। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে এর মধ্যেও ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ৫৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯৬টির। আর ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৯৬ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৪০ পয়েন্টে নেমে গেছে।

অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

প্রধান মূল্যসূচকের বড় পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৮৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬৩৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৪৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বিডি থাই অ্যালুমেনিয়াম শেয়ার। দিনভর কোম্পানিটির ২৪ কোটি ৫৮ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশের ১৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৮ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে দেশবন্ধু পলিমার।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ব্র্যাক ব্যাংক, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, কর্ণফুলি ইন্স্যুরেন্স এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৪৭৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ২১৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৮টির এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *