বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যের পোশাক আমদানি কমেছে
২০২৩ সালের প্রথম ১০ মাস জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যের পোশাক আমদানির অর্থমূল্য ছিল ২৪২ কোটি ৫৯ লাখ ৪৩ হাজার ৮৬৬ পাউন্ড। ২০২২ সালের একই সময়ে যার অর্থমূল্য ছিল ২৬৫ কোটি ৬৪ লাখ ৪৩ হাজার ৪৭৪ পাউন্ড। এ হিসেবে ২০২৩ সালের ১০ মাসে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যের পোশাক আমদানি কমেছে ৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ইউকে ট্রেড স্ট্যাটিসটিক্স সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
যুক্তরাজ্য সরকারের রাজস্ব ও শুল্ক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২০২৩ সালের প্রথম ১০ মাসে বিশ্ববাজার থেকে যুক্তরাজ্যের পোশাক আমদানির অর্থমূল্য ছিল ৯৭৪ কোটি ১৯ লাখ ৩২ হাজার ৫৬২ পাউন্ড। ২০২২ সালের তুলনায় যা ১৬ দশমিক ১৬ শতাংশ কম।
গত বছরের প্রথম ১০ মাসে দেশটির মোট পোশাক আমদানির প্রায় ২৫ শতাংশই হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। পণ্যের পরিমাণের দিক থেকে ২০২২ সালের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি কমিয়েছে যুক্তরাজ্য। যার হার ৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ২০২৩ সালের ১০ মাসে বাংলাদেশ থেকে দেশটি আমদানি করেছে ১৭ কোটি ৮৩ লাখ ৮৮ হাজার ৭৮৮ কেজি পোশাক। পণ্যের পরিমাণ ও অর্থমূল্য—উভয় বিবেচনায় যুক্তরাজ্যের পোশাক আমদানির দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস বাংলাদেশ।
যুক্তরাজ্যের পোশাক আমদানির বৃহৎ উৎসগুলোর মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছে চীন। গত বছরের প্রথম ১০ মাসে চীন থেকে যুক্তরাজ্যের পোশাক আমদানি হয়েছে ২৫৬ কোটি ৪২ লাখ ৬০ হাজার ৪০২ পাউন্ডের। ২০২২ সালের তুলনায় আমদানি কম হয়েছে ২০ দশমিক ৭৪ শতাংশ। পোশাকের পরিমাণ বিবেচনায়ও চীন থেকে পোশাক আমদানি কমেছে যুক্তরাজ্যের। ২০২২ সালের প্রথম ১০ মাসের তুলনায় ১১ দশমিক ৪০ শতাংশ কমে ২০২৩ সালে চীন থেকে যুক্তরাজ্য ১৫ কোটি ৯২ লাখ ৫০ হাজার ৭৭১ কেজি পোশাক আমদানি করা হয়।
চীন ও বাংলাদেশের পর পোশাক আমদানিতে যুক্তরাজ্যের অন্য প্রধান উৎসদেশগুলোর মধ্যে রয়েছে তুরস্ক, ভারত, পাকিস্তান, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, শ্রীলংকা ও ইন্দোনেশিয়া। ভিয়েতনাম ছাড়া অন্য সব দেশ থেকে গত বছরের প্রথম ১০ মাসে পোশাক আমদানি কমেছে যুক্তরাজ্যের।
পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে, ২০২৩ সালে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির গতি বজায় থাকবে—এমন প্রত্যাশা থাকলেও বাস্তবতা হলো জানুয়ারি-অক্টোবরের মধ্যে যুক্তরাজ্যের বৈশ্বিক পোশাক আমদানি পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ২০২৩ সাল ডিসেম্বরের শেষের দিকে হলিডে সেলস পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের রিটেইল সেলসের (খুচরা বিক্রয়ের) একটি অন্ধকার চিত্র তুলে ধরে। অন্যদিকে আমদানিতে মূল্য এবং পরিমাণের দিক থেকে এ ব্যবধান মূল্য স্তর বাড়ানোর জন্য চাপ তৈরি করেছে, যা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, যুক্তরাজ্যের মোট পোশাক আমদানিতে মূল্যের দিক থেকে বাংলাদেশের শেয়ার ২৩ শতাংশ এবং পরিমাণের দিক থেকে ২৮ শতাংশ। এ বাজারে বাংলাদেশের এখনো সুযোগ রয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা সম্ভাব্য ব্যয় সাশ্রয়, সময়মতো পণ্য ডেলিভারি এবং গুণমান বজায় রাখার মাধ্যমে আমাদের অবস্থান সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম হয়েছি, যা আমাদের ফ্যাশন বিশ্বে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রেখেছে। যেহেতু আমরা স্যাচুরেশন পয়েন্টের কাছাকাছি চলে এসেছি এবং আগামী দশকগুলোতে বৈশ্বিক বাণিজ্য নীতি এবং প্রতিযোগিতার দৃশ্যপট বদলে যাবে, এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববাজারে আরো অংশ করায়ত্ত করা এবং প্রবৃদ্ধি টেকসই রাখার মূল চাবিকাঠি হবে ব্যাকওয়ার্ড ও ফরোয়ার্ড লিংকেজ শিল্পে সক্ষমতা অর্জন করে উচ্চমূল্য সংযোজনকারী পণ্যে যাওয়া ও উচ্চমূল্যের বাজারগুলো সম্প্রসারণ করা।