পতনে শেয়ারবাজার

স্টাফ রিপোর্টার

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের পরের কার্যদিবসে দেশের শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হলেও দ্বিতীয় কার্যদিবসে এসে আবার দরপতন হয়েছে।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে, দাম কমেছে তার দ্বিগুণের বেশি প্রতিষ্ঠানের। ফলে কমেছে প্রধান মূল্যসূচক।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। তবে বেড়েছে মূল্যসূচক। অবশ্য বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রীক রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে নেতিবাচক ধারায় থাকে দেশের শেয়ারবাজার। নতুন বছর ২০২৪ সালের শুরুতেও শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়।

বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপে প্রায় প্রতিদিনই লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়। সেই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেন আশঙ্কাজনক হারে কমে তিনশ কোটি টাকার নিচে নেমে যায়। তবে ভোটের আগে শেষে কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বিক্রির চাপ কিছুটা কমে। এতে লেনদেনের গতি খুব বেশি না বাড়লেও দাম বাড়ার তালিকায় চলে যায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলে।

ভোটের আগে শেয়ারবাজারে ইতিবাচক ধারা ভোটের পর প্রথম কার্যদিবসেও দেখা যায়। ভোটের পর প্রথম কার্যদিবস সোমবার বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়। সেই সঙ্গে বাড়ে লেনদেনের গতি।

এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে সূচকেও ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলে। কিন্তু প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতে বদলে যায় বাজারের চিত্র। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে।

ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ৫৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১১০টির। আর ১৮৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স ১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৬৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৩৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৬৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৩২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১০১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

প্রধান মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৯৫ কোটি ৩৯ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৪১ কোটি ১৩ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৫৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা।

ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিডি থাই অ্যালুমিনিয়ামের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২২ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২১ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রূপালী ব্যাংক।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, মিডল্যান্ড ব্যাংক, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস এবং অলিম্পিক এক্সেসরিজ।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৬৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪২টির এবং ৭৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *