বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ

স্টাফ রিপোর্টার

দেশের অর্থনীতি গত কয়েক মাস ধরেই চাপে রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংকটের আশঙ্কাও রয়েছে। এ সময়ে কৌশলী ব্যাংকগুলো। তারা এখন ঋণ কম দেওয়ার কৌশল নিয়েছে। আবার ব্যবসায়ীরাও কম ঋণ নিচ্ছেন। এতে সাম্প্রতিক সময়ে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি কমেছে। গত নভেম্বর শেষে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য বলছে, গত জুলাই মাসে বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণে প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ, যা আগস্ট মাসে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ নেমে আসে। সেপ্টেম্বরে আরও কিছুটা কমে নেমে আসে ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশে। তবে কিছুটা বেড়ে যায় অক্টোবরে। এ মাসটিতে প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। আর সবশেষ নভেম্বরে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯০ শতাংশে।

ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত এক বছরে ধরে বেসরকারি খাতে ঋণের নিট প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশের কম। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই ঋণের প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশ বা তার বেশি হতো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাপিটাল গুডস ও ক্যাপিটাল ম্যাটেরিয়াল আমদানি কম হচ্ছে। বেসরকারি খাতে যেসব ঋণ যাচ্ছে তার বেশিরভাগই কনজুমার গুডস ইম্পোর্ট ব্যয় মেটানোর জন্য। গ্রাহক পর্যায়ের ঋণের সুদহার বাড়ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তার পলিসি রেট চলতি অর্থবছরে কয়েকবার বাড়িয়েছে। বেশি রেটে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তারল্য নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। তাছাড়া গ্রাহক পর্যায়ে সুদহার বাড়ায় গ্রাহকদের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কমছে। এসব কারণে বেসরকারি খাতে ঋণের নিট প্রবৃদ্ধি কমেছে।

অন্যদিকে চলতি মাস জানুয়ারিতে গ্রাহক ঋণের সুদহার হবে ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। যেটা জুন মাসে রেট ছিল ১০ শতাংশের মতো। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রেণে মানি সাপ্লাই কমাতে সংকোচনমূলক ধরা অব্যাহত রাখা হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে এ নামিয়ে আনতে চাই। সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য বলছে, অক্টোবরে দেশের মূল্যস্ফীতি রয়েছে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক নানা চ্যালেঞ্জ বিবেচনা নিয়ে আগামী ১৫ জানুয়ারি চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন মুদ্রানীতিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে মূল্যস্ফীতিকে। এজন্য মুদ্রানীতির ভঙ্গিমা সংকোচনমুখী করা হচ্ছে। এতে বাজারে টাকার প্রবাহ আরও কমে যেতে পারে, ঋণের সুদহার আরও বাড়তে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *