বিশ্বব্যাপী পেমেন্টে ইউয়ানের ব্যবহার বাড়ছে —সুইফট

স্টাফ রিপোর্টার

বিশ্বব্যাপী পেমেন্ট সিস্টেমে চীনা ইউয়ানের ব্যবহার বাড়ছে। গত নভেম্বরে মূল্য পরিশোধের পরিমাণের দিক বিবেচনায় চতুর্থ শীর্ষ মুদ্রার স্থান দখল করেছে ইউয়ান। গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল মেসেজিং সেবা সুইফটের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর আরটি।

চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, নভেম্বরে বিশ্বব্যাপী মূল্য পরিশোধে ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ লেনদেনে ইউয়ান ব্যবহার করা হয়েছে। এর আগের মাসে যার পরিমাণ ছিল ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। নভেম্বরে ইউয়ান জাপানি মুদ্রা ইয়েনকেও পেছনে ফেলেছে। ইয়েনে মূল্য পরিশোধের হার অক্টোবরের ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ থেকে কমে গত মাসে ৩ দশমিক ৪১ শতাংশে নেমেছে।

সব মিলিয়ে ইউয়ানে পেমেন্টের মূল্য অক্টোবরের তুলনায় ৩৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেড়েছে। ২০২২ সালের নভেম্বরের তুলনায় গত মাসে ইউয়ানের বৈশ্বিক শেয়ার দ্বিগুণ বেড়েছে। গত বছরের নভেম্বরে ইউয়ানে বৈশ্বিক লেনদেনের মাত্র ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছিল।

এদিকে গত মাসে বিশ্বের অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় মুদ্রার শেয়ার কমেছে। অক্টোবরের ৪৭ দশমিক ২৫ থেকে নভেম্বরে মার্কিন ডলারে পেমেন্ট হার নেমে এসেছে ৪৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশে। গত মাসে ইউরোতে লেনদেন নেমেছে ২২ দশমিক ৯৫ শতাংশে। অক্টোবরে মুদ্রাটিতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। একই সময়ে যুক্তরাজ্যের পাউন্ডে পেমেন্টের সংখ্যা অক্টোবরের ৭ দশমিক ৩৩ থেকে নভেম্বরে কমে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১৫ শতাংশে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ তথ্য ডিডলারাইজেশনকে (ডলার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চীনা প্রবণতা) প্রতিফলিত করছে। ফলে বৈদেশিক লেনদেনে ইউয়ানের ব্যবহার বৃদ্ধি ডলারের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা জানান, রাশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যে ডলার ব্যতীত ভিন্ন মুদ্রায় অর্থ প্রদানের জন্য চাপ দিচ্ছে চীন। ডাই-ইচি লাইফ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান অর্থনীতিবিদ তোরু নিশিহামা বলেছেন, ‘উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো চীন থেকে রাশিয়ান জ্বালানি তেল আমদানির মূল্য ইউয়ানে পরিশোধ করছে।’

রাশিয়ান ব্যবসায়ী ওলেগ ডেরিপাস্কা চলতি মাসে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘মস্কোর ওপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ফলে চীনা মুদ্রার ব্যবহার বেড়েছে।’ এ ব্যবসায়ীর মতে, ‘ইউয়ানে বৈদেশিক পেমেন্টের পরিমাণ চার বছরের মধ্যে ইউরোকেও ছাড়িয়ে যাবে।’

রাশিয়া ও তার বাণিজ্যিক অংশীদাররা ২০২২ সালে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর ডলারের পরিবর্তে ভিন্ন মুদ্রায় লেনদেন করে আসছে। রাশিয়াসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো পশ্চিমা আর্থিক ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে ডলার ও ইউরোর পরিবর্তে ইউয়ান, ভারতীয় রুপি এবং আমিরাতি দিরহামে লেনদেনকে উৎসাহিত করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *