নির্ধারিত তারিখে আইনজীবীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার

অর্থঋণ আদালতের মামলা যথাসময়ে নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে মামলার নির্ধারিত তারিখে আইনজীবীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। বুধবার এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত জুন পর্যন্ত সারাদেশের অর্থঋণ আদালতগুলোতে ৭২ হাজার ৫৪০টি বিচারাধীন মামলার বিপরীতে আটকে আছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৭০ কোটি টাকা।

বিদ্যমান আইনে সমন জারির ৯০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির কথা বলা আছে। ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, মামলা নিষ্পত্তিতে বছরের পর বছর লেগে যায়। ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ না কমার অন্যতম একটি কারণ অর্থঋণ আদালতে মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা। এ ক্ষেত্রে আদালতের সংখ্যা কম থাকার বিষয়টি সঠিক। একই সঙ্গে নির্ধারিত তারিখে ব্যাংকের আইনজীবী উপস্থিত না হওয়ার অনেক ঘটনা রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, অর্থঋণ আদালত আইনের মাধ্যমে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির জন্য পৃথক আদালত গঠিত হয়েছে। সময়াবদ্ধ কার্যপদ্ধতি অনুযায়ী মামলা নিষ্পত্তির আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন অর্থঋণ মামলার রায় ও আদেশ পর্যালোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে, মামলা নিষ্পত্তিতে প্রত্যাশিত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি সময় ব্যয় হচ্ছে। এতে আমানতকারী ও ব্যাংক উভয়ের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে। নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতার পেছনে সব পক্ষ বিশেষ করে বাদী ব্যাংকের সুদক্ষভাবে মামলা পরিচালনায় অনেক অবহেলা পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত। এ প্রেক্ষাপটে অর্থঋণ আদালতে বিচারাধীন মামলা যথাসময়ে সুদক্ষভাবে নিষ্পত্তির জন্য নির্ধারিত তারিখে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে সর্বোচ্চ প্রস্তুতিসহ মামলা পরিচালনা করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, অর্থঋণ আদালতে মামলা নিষ্পত্তিতে বছরের পর বছর পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আদালত কম থাকা একটি কারণ। তবে অনেক ক্ষেত্রে নির্ধারিত তারিখে আইনজীবী উপস্থিত হচ্ছেন না। যে কারণে বারবার তারিখ পিছিয়ে যায়। এতে আইনজীবীর ফি বাড়তে থাকে। আবার মামলা নিষ্পত্তি শেষে মোট পাওনার ওপর পুরো সময়ের জন্য ব্যাংক ১২ শতাংশ সুদ পায়। সব মিলিয়ে গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হন। আবার ব্যাংকের খেলাপি ঋণ না কমায় ব্যাংকও ক্ষতির মুখে পড়ে। তাই যথাসময়ে মামলা নিষ্পত্তিতে নতুন এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *