পোশাক রপ্তানি নিষিদ্ধের বিষয়টি ‘সত্যের অপলাপ’

স্টাফ রিপোর্টার

পোশাক রপ্তানি নিষিদ্ধের বিষয়ে একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে তৈরি পোশাক মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতি- বিজিএমইএ। এতে ওই প্রতিবেদনকে সত্যের অপলাপ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সংগঠনটি।

রোববার (৫ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিজিএমইএ জানায়, আমরা বিষয়টি স্পষ্ট করার উদ্যোগ নিয়েছি। যাতে শিল্প বিষয়ে বিভ্রান্তির অবসান হয়ে সত্য প্রকাশিত হয় এবং এ ধরনের প্রতিবেদনের পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিজিএমইএ জানায়, ‘যেহেতু সংবাদে বলা হয়েছে একটি নির্দিষ্ট দেশে একটি নির্দিষ্ট ব্র্যান্ড কর্তৃক সোর্স ও রিটেইল করা শিশুদের জন্য একটি নির্দিষ্ট আইটেমে শ্বাসরুদ্ধকরণ এবং ইনজেশনের ঝুঁকির মতো প্রযুক্তিগত ত্রুটি পাওয়া গেছে। তাই এ ঘটনাকে শিল্প ও বৃহত্তরভাবে দেশের ওপর ঢালাওভাবে চাপিয়ে দেওয়ার যে কোনো প্রচেষ্টা গ্রহণযোগ্য নয়। প্রকাশিত সংবাদে ১২টি দেশ কর্তৃক বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রত্যাহার করার কথা উল্লেখ করা হলেও এ ধরনের দাবির বিষয়ে কোনো রেফারেন্স নেই। আমরা এর স্বপক্ষে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণও খুঁজে পাইনি।’

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘ওইসিডির বিষয়টিও স্পষ্ট করতে চাই, যা প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ওইসিডি পণ্য রিকল করার গ্লোবাল পোর্টাল হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং ওইসিডি সদস্যদের পণ্য প্রত্যাহার করার বিজ্ঞপ্তিগুলো এই পোর্টালে তালিকাভুক্ত করা হয়। যে কোনো বৈধ কারণে পণ্য প্রত্যাহার করা একটি প্রচলিত চর্চা এবং আজ পর্যন্ত এই ধরনের শত শত প্রত্যাহার ওইসিডি ওয়েবসাইটে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।’

‘এছাড়াও ওইসিডি ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে, হেলথ কানাডা বুধবার ২ লাখের বেশি জর্জ ব্র্যান্ড স্লিপার (রাতে পরার পোশাক) শিশুদের শ্বাসরোধ এবং খাওয়ার ঝুঁকি তৈরি করার জন্য প্রত্যাহার করেছে। ওয়ালমার্টে বিক্রি হওয়া প্রত্যাহার করা পণ্যটির সাইজ ০-৫টি এবং এর মধ্যে ছেলেদের জন্য দুটি এবং মেয়েদের জন্য দুটি স্টাইল অন্তর্ভুক্ত। সংস্থাটি বলেছে, রাতে পরার পোশাকের জিপারের টানে এবং পায়ের গ্রিপগুলো ঘন ঘন ধোয়ার পরে শেষ পর্যন্ত আলাদা হয়ে যেতে পারে। যার ফলে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার এবং ইনজেশনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। সংস্থাটি কানাডায় কোনো আঘাতপ্রাপ্তির রিপোর্ট পায়নি।’

তাই স্বাস্থ্যগত কিছু ঝুঁকির কারণে পণ্যগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে, যা বাংলাদেশি প্রস্তুতকারকদের ভুল নয় বলে জানান বিজিএমইএ সভাপতি। তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে তৈরি সব পণ্যকে অবশ্যই একটি কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া অনুসরণ এবং ভোক্তাদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ল্যাব পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সব রপ্তানিযোগ্য পণ্যকে অবশ্যই ক্রেতাদের মান ও রপ্তানি বাজারের জন্য প্রাসঙ্গিক আইনের শর্ত পূরণ করতে হবে। ভোক্তাদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার শর্ত পূরণে ব্যর্থ যে কোনো পণ্য সাধারণত ক্রেতাদের দ্বারা প্রত্যাখান করা হয়। তাই বাংলাদেশে তৈরি পোশাক উল্লেখিত দেশগুলোতে নিষিদ্ধ হয়েছে- এমন যে কোনো অপব্যাখ্যা সত্যের অপলাপ মাত্র। অভিযুক্ত পণ্যগুলো ২০২২ সালের প্রথম দিকে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো হয়েছিল এবং ২০২২ এর নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত কানাডায় খুচরা বাজরে বিক্রি করা হয়। হেলথ কানাডার পণ্য প্রত্যাহার বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০২৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সংস্থাটি কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে- এ মর্মে কোনো রিপোর্ট পায়নি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *