আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার আশা ডিসেম্বরের মধ্যে: বাংলাদেশ ব্যাংক

স্টাফ রিপোর্টার

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮১ মিলিয়ন বা ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পেতে পারে বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর ২০২৩) এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক। সংবাদ সম্মেলনে রিজার্ভ নিয়ে বললেও নিট রিজার্ভ নিয়ে কথা বলেননি তিনি।

এর আগে এদিন সকাল ১০টা থেকে আইএমএফ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিদের নেতৃত্ব দেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। আর ১৩ সদস্যের আইএমএফ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ।

আজকের বৈঠকে দ্বিতীয় কিস্তির শর্ত চূড়ান্ত করা হয়। ঋণ চুক্তিতে থাকা বাংলাদেশের প্রথম কিস্তির অর্থ ব্যবহারের অগ্রগতি দেখে পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের জন্য আইএমএফের আর্টিকেল-ফোরের অধীনে রিভিউ মিশনের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরে আসে গত ৪ অক্টোবর।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন, ‘আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির জন্য দেওয়া ৬ শর্তের দুই শর্ত পূরণ করতে পারিনি, বাকিগুলো পূরণ হয়েছে। তবে দুটি শর্ত কেন পূরণ করা যায়নি তার ব্যাখ্যা আইএমএফকে আমরা দিয়েছি। ব্যাখ্যায় তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছে। আগামী ১১ ডিসেম্বর আইএমএফের বোর্ড মিটিং আছে। আশা করছি সেখানে দ্বিতীয় কিস্তির অনুমোদন আসবে। আমরা ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাবো।’

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে তিনি বলেন, ‘নিট রিজার্ভ সম্পর্কে আমি এখন বুঝতে পারছি না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব সম্পর্কে বলতে পারবো। বিপিএম ৬ অনুযায়ী হিসাব প্রতি সপ্তাহে ওয়েবসাইটে আপলোড করা হচ্ছে।’

মেজবাউল হক আরও বলেন, ‘আমরা যে দুই শর্ত পূরণ করতে পারিনি তার একটি নিট রিজার্ভ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২৫ দশমিক ৩ বিলিয়নে রাখা, সেটা হয়নি। অন্যটি হলো রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন। রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা, বিপরীতে ১৪ হাজার পিছিয়ে রয়েছে আদায়।‘

আইএমএফের মোট ৪৭০ কোটি বা ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি অনুমোদনের পর গত ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। ঋণের জন্য বেশকিছু শর্ত দেয় আইএমএফ। এগুলোর মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারমুখী করা, ব্যাংক ঋণে সুদ হারের ৯ শতাংশের সীমা তুলে দেওয়া, ব্যাংক ঋণের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের তথ্য প্রকাশ, রিজার্ভের হিসাব আইএমএফ স্বীকৃত পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী করে প্রকাশ, ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা, শেয়ারবাজারের উন্নয়নসহ বেশকিছু আর্থিক ও নীতি সংস্কারে মধ্যে দিয়ে যেতে হয় বাংলাদেশকে।

এর আগে ঋণ আলোচনায় সরকার, মন্ত্রণালয়, সরকারি দপ্তর ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছিল আইএমএফ। এবার আসা রিভিউ মিশনের প্রতিনিধিরা প্রথমবারের মতো ব্যাংক খাতের নির্বাহীদের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করেন। আলোচনা শেষে প্রধান কার্যালয় থেকে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে আইএমএফ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *