ছোলার দাম বেড়েছে মণে ২৫০ টাকা
দেশের বাজারে প্রতি বছর রোজার মাসে ছোলার চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। রোজা ও ঈদ সামনে রেখে পণ্যটির আমদানিও বেশি হয়। চলতি বছর রোজার ঈদের পর থেকে চাহিদা তুলনামূলক কম থাকায় দেশীয় আমদানিকারকরা ছোলা আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন।
এর জের ধরে দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পণ্যটির সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। প্রভাব পড়েছে ছোলার দামে। গত এক সপ্তাহে পণ্যটির দাম মণপ্রতি (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) ২৫০ টাকা বেড়েছে।
অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশের বাজারে সবচেয়ে বেশি ছোলা আমদানি হয়। গতকাল খাতুনগঞ্জের পাইকারি আড়তগুলো ঘুরে অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি করা ভালো মানের ছোলা মণপ্রতি ২ হাজার ৯৩০ টাকা থেকে ২ হাজার ৯৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। এক সপ্তাহ আগেও পণ্যটি মণপ্রতি ২ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৭২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
সে হিসাবে, গত এক সপ্তাহে পাইকারি বাজারে প্রতি মণ ভালো মানের ছোলার দাম বেড়েছে মণে ২৩০ টাকা। অন্যদিকে আমদানি করা কিছুটা নিম্নমানের ছোলা মণপ্রতি ২ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৭৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। এক সপ্তাহ আগেও পণ্যটির দাম ছিল মণপ্রতি ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫৫০ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ, সপ্তাহান্তে কিছুটা নিম্নমানের ছোলার দাম বেড়েছে মণে ২৫০ টাকা।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, গত রোজায় চাহিদা বেশি থাকার কারণে অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি মিয়ানমার থেকেও ছোলা আমদানি হয়েছিল। এ কারণে রোজার মাসেও দেশের বাজারে ছোলার দাম খুব একটা বাড়েনি। তবে ঈদের পর থেকে দেশে পণ্যটির চাহিদা একেবারে কমে গেছে।
চাহিদা কম থাকায় এ সময় মিয়ানমার থেকে ছোলা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন আমদানিকারকরা। অস্ট্রেলিয়া থেকেও পণ্যটির আমদানি কমে গেছে। ফলে পাইকারি বাজারে ছোলার সরবরাহ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। প্রভাব পড়েছে পণ্যটির দামেও। এক সপ্তাহেই ছোলার দাম বেড়েছে মণে ২৫০ টাকা।
খাতুনগঞ্জের ডাল ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেলিম বলেন, গত জুনের আগে আন্তর্জাতিক বাজারে ছোলার দাম কমতির দিকে ছিল। এর পর থেকে দাম বাড়তে শুরু করে। একদিকে বাড়তি বুকিং দর, অন্যদিকে দেশে চাহিদা কমে যাওয়া— এ দুইয়ের জের ধরে আমদানিকারকরা ছোলা আমদানিতে আগ্রহ হারান। ফলে পণ্যটির সরবরাহ সংকট দেখা দিলে দাম বাড়তে শুরু করেছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ডাল মিল মালিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন মহিম বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের বুকিং দরের ওপর নির্ভর করে আমদানি পণ্যের বাজার। বাড়তি আমদানি হওয়ায় রোজার সময় দেশে ছোলার দাম স্থির ছিল। পরবর্তীতে বাড়তি দাম ও ক্রমহ্রাসমান চাহিদার কারণে আমদানি কমে গিয়ে দেশের পাইকারি বাজারে ছোলার দাম বেড়েছে। আগামী দিনগুলোয় আমদানি বাড়ানো সম্ভব না হলে ছোলার দাম আরো বাড়তে পারে।