ইউরোপে এলএনজি আমদানি ২০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্নে
ইউরোপের দেশগুলোয় গত জুলাইয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) মজুদ কমে ২০ মাসের সর্বনিম্নে। মূলত ইউরোপিয়ান বাজার আদর্শ প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে বর্তমানে এলএনজি আমদানিতে আগ্রহ কম। খবর অয়েলপ্রাইস ডটকম।
জুলাইয়ে ইউরোপে এলএনজি আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ শতাংশ কমেছে। আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৬ লাখ টনে। ২০২১ সালের নভেম্বরের পর এটি সর্বনিম্ন আমদানি।
নরওয়ে থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ কমে যাওয়ার আশঙ্কায় চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে দাম বেড়ে গিয়েছিল। তবে ফ্রর্ট মান্থ ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে টিটিএফ হাবে প্রতি মেগাওয়াট ঘণ্টা গ্যাসের দাম ৩০ ডলার ৪৩ সেন্টে নেমেছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোয় ইউরোপের বাজার আদর্শ গ্যাসের দাম লক্ষণীয় মাত্রায় কমেছে। গত গ্রীষ্ম মৌসুমে পর্যাপ্ত মজুদ থাকায় গ্যাসের দাম রেকর্ড মাত্রায় কমে গিয়েছিল। সাম্প্রতিক মাসগুলোয় তার চেয়েও ৮০ শতাংশ কমেছে।
বর্তমানে ইউরোপে গ্যাসের মজুদ পাঁচ বছরের গড়ের চেয়ে বেশি। ফলে দেশটিতে জ্বালানিটির সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ কমে এসেছে। ৩১ জুলাই পর্যন্ত ইউরোপের গ্যাস সাইটগুলোর ৮৫ শতাংশই ছিল পরিপূর্ণ। এমন মজুদ পরিস্থিতির কারণে নরওয়ে থেকে সরবরাহ কমলেও দাম বাড়ছে না।
কম দামের কারণে এখন ইউরোপের ব্যবসায়ীরা এলএনজি আমদানির ওপর জোর দিচ্ছেন না। এমন বাস্তবতায় বিক্রেতারা এশিয়ার বাজারকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। সেখানের স্পট মার্কেটে এরই মধ্যে এলএনজির দাম ঊর্ধ্বমুখী। কারণ জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের কিছু অংশ তীব্র দাবদাহ।
এশিয়ায় ছয় মাসের মধ্যে জুলাইয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) চাহিদা বেড়েছে প্রবলভাবে। পণ্যবাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলারের তথ্যমতে, এশিয়ায় জুলাইয়ে জ্বালানিটির আমদানি হয়েছে ২ কোটি ১৮ লাখ ১৫ হাজার টন। যেখানে জুনে হয়েছিল ২ কোটি ১২ লাখ ৮০ হাজার টন। জানুয়ারির পর ওই মাসেই সবচেয়ে বেশি এলএনজি আমদানি হয়েছে। জুলাইয়ে এশিয়ায় মোট আমদানি বেড়েছে ৫ লাখ ৭০ হাজার টন।
এশিয়ার বড় আমদানিকারকদের মধ্যে চীনের চাহিদা বেশ কমই ছিল। অন্যদিকে, চীন থেকে গত বছর সবচেয়ে বেশি এলএনজি কেনার ইতিহাস গড়েছে জাপান। জুলাইয়ে তারা আমদানি করেছে ৫০ লাখ ৯০ হাজার টন, যা জুনের ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টন থেকে হালকা বেশি। কিন্তু গত বছরের জুলাইয়ের ৬৭ লাখ ১০ হাজার টন থেকে অনেক কম।
দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ এলএনজি ক্রেতা। জুলাইয়ে তারা আমদানি করেছে ২৮ লাখ ১০ হাজার টন, যা জুনের ২৯ লাখ ২০ হাজার টন থেকে অল্প একটু কম। অন্যদিকে, দামের বিষয়ে সংবেদনশীল ভারতে জুলাইয়ে আমদানি হয়েছে ১৮ লাখ ৪০ হাজার টন। যেখানে জুনে ছিল ১৭ লাখ ৭০ হাজার টন।
এশিয়ার দেশগুলোয় রাশিয়া থেকে এলএনজি আমদানি লক্ষণীয় মাত্রায় কমছে। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় এ অঞ্চলের ক্রেতারা আমদানিতে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছেন। ফলে আমদানি কমে দুই বছরের সর্বনিম্নে।