২০১৪ সালের কথা মাথায় রেখে আইনশৃঙ্খলার ছক তৈরির নির্দেশ
আসন্ন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে কেউ যেন ২০১৪ সালের মতো তাণ্ডব চালাতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।
তিনি বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আমাদের ৯৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন আমরা চূড়ান্ত পর্যায়ে আছি। ২০১৪ সালের নির্বাচনের কথা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। তখন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। তখনও সব বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এরপরও পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন, প্রিজাইডিং অফিসার নিহত হয়েছেন। সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে। সেই পরিস্থিতি যেন আবার সৃষ্টি না হয় সেদিকে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানরা এখানে উপস্থিত হয়েছেন। আগামী ৩০ ডিসেম্বর আমাদের অত্যন্ত প্রত্যাশিত একটি দিন। সেদিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে দিনটির মধ্য দিয়ে একটি নতুন সরকার, নতুন সংসদ প্রতিষ্ঠিত হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে এ ধরনের অনুষ্ঠান এটাই আমাদের শেষ। তবে আমরা আলাদা আলাদাভাবে বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করেছি, তাদের কথা শুনেছি, আমাদের মতামত তুলে ধরেছি।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে সিইসি বলেন, এবার নির্বাচনে আপনাদের দায়িত্ব জনগণের জানমাল রক্ষা, দেশের পরিস্থিতি শান্ত রাখা। আমরা আশা করবো, আপনারা নিজেদের পেশাদারিত্বের অভিজ্ঞতা থেকে দায়িত্ব পালন করবেন। সেধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি না হতে পারে, সেদিকে এখন থেকেই সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
কে এম নূরুল হুদা বলেন, আমরা কিন্তু আশঙ্কাগুলো উপেক্ষা করতে পারি না। দুটো জীবন চলে গেল। এই জীবনের মূল্য অনেক। এখানে ওখানে ভাঙচুর, প্রতিহত করা। এগুলো কি শুধুই রাজনৈতিক কারণে? নাকি ২০১৪ সালের মতো ভয়াভহ পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা? গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বিশেষ নজরদারির অনুরোধ রাখবো।
ইভিএম সম্পর্কে তিনি বলেন, ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন আমরা ব্যবহার করতে চাই। বাক্স ছিনতাইকারীদের হাত থেকে ভোটারদের মুক্তি দিতে হবে। এর জন্য বিকল্প পদ্ধতি প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশন মনে করে ইভিএম হলো সেই বিকল্প পদ্ধতি। এর মাধ্যমে ভোটারদের ভোটের নিশ্চয়তা দান সম্ভব হবে। আমারা যেসব আসনে ইভিএম ব্যবহার করছি, আপনাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে, সেগুলোতে আলাদা দৃষ্টি দেওয়া।
সিইসি বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিশ্চয়তা কীভাবে থাকবে, সেটা আপনারা দেখবেন। মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়টা আপনাদের আলাদাভাবে দেখতে হবে। যাতে তারা ভোট দিযে নিরাপদে বাসস্থানে ফেরত যেতে পারেন। এলাকার সন্ত্রাসীদের তালিকা তৈরি করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।