জিরার দাম কেজিতে ৪০০ টাকা বেড়েছে সাতক্ষীরায়

স্টাফ রিপোর্টার

সাতক্ষীরায় জিরার দাম বেড়েছে ব্যাপক হারে। এক থেকে দেড় মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি জিরার মূল্য ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অপ্রতুল হওয়ায় বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে।

সাতক্ষীরা জেলা সদরের বৃহৎ বাণিজ্যিক মোকাম সুলতানপুর বড়বাজারে গতকাল আমদানীকৃত প্রতি কেজি জিরা ১ হাজার ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, যা দেড় মাস আগেও বিক্রি হয়েছে ৭০০ টাকা কেজি দরে। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে চাহিদার তুলনায় জিরার সরবরাহ খুবই অপ্রতুল। তাছাড়া পণ্যটির আমদানি ব্যয় অনেকাংশে বেড়ে গেছে।

সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর এলাকার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা কালিদাশ কর্মকার জানান, সম্প্রতি মসলাজাত পণ্য জিরার দাম লাগাহীন বেড়েছে। দেড় থেকে দুই মাস আগে যে জিরা ৬৫০-৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, তা বর্তমানে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে। শুধু জিরা নয়, সব ধরনের মসলার দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর জীবন নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের মসলা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাফসান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আবু হাসান বলেন, ‘‌ভারতে জিরার দাম বেড়েছে ব্যাপক হারে। তাছাড়া পণ্যটির সরবরাহও কম। অন্যান্য অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের শুরুতে জিরা আমদানি কমে গেছে। গত অর্থবছরের এ সময় সপ্তাহে ৮-১০ ট্রাক জিরা আমদানি করেছি আমরা। এখন সপ্তাহে ৩-৪ ট্রাক জিরা আসছে। আমদানি কমে যাওয়ায় দেশীয় বাজারে জিরার দাম বেড়েছে।’

প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১১ মাসে প্রায় ৫০ কোটি টাকার জিরা আমদানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় এক হাজার টন কম। ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা বলছেন, ভারতে সরবরাহ কমে যাওয়ায় জিরা আমদানি কমেছে।

ভোমরা শুল্কস্টেশনের রাজস্ব শাখা থেকে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-মে পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে জিরা আমদানি হয়েছে ৩ হাজার ৬৩৯ টন। যার আমদানি মূল্য ছিল ৫৯ কোটি ৫ লাখ টাকা। অন্যদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-মে পর্যন্ত ১১ মাসে জিরা আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৫৫৯ টন। যার আমদানি মূল্য ৪৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা। সে হিসাব অনুযায়ী এ বন্দর দিয়ে জিরা আমদানি কমেছে ১ হাজার ৮০ টন।

ভোমরা বন্দরে মসলা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাফসান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আবু হাসান জানান, অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় তার প্রতিষ্ঠানে জিরা আমদানি কমেছে। ভারতে সরবরাহ কমে যাওয়ায় মূলত আমদানিতে নিম্নমুখী প্রবণতা তৈরি হয়েছে। তাছাড়া ডলার সংকটের পাশাপাশি এলসি জটিলতাও আমদানি কমে যাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা পালন করেছে। অন্যদিকে সরবরাহ অপ্রতুল হওয়ায় ভারতের বাজারে জিরার দামও বেড়েছে বলে জানান এ ব্যবসায়ী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *