প্রাইভেটে চিকিৎসা বন্ধ, বৈকালিক চেম্বারে দ্বিগুণ রোগী

স্টাফ রিপোর্টার

সারাদেশে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার বন্ধ রেখে আন্দোলন করছেন গাইনি চিকিৎসকরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখেছেন চিকিৎসকরা। এর প্রভাব পড়েছে বৈকালিক চেম্বারে। সোমবার (১৭ জুলাই) ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে বৈকালিক চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন দ্বিগুণেরও বেশি রোগী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি সেন্ট্রাল হাসপাতালের দুই চিকিৎসককে গ্রেফতার ও সারাদেশে চিকিৎসকদের নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং নিরাপদ কর্মস্থলের দাবিতে নানান কর্মসূচি পালন করে আসছেন চিকিৎসকরা। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ ও ১৮ জুলাই দেশের সব বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)। ফলে চিকিৎসকরা সোমবার বেসরকারি হাসপাতালে সেবা দেননি।

সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা শনি থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটা থেকে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সেবা দেন। কিন্তু সোমবার সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দিলেও বেসরকারি হাসপাতালে কোনো রোগী দেখেননি চিকিৎসকরা। এর প্রভাব পড়েছে ২৫০ শয্যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে বৈকালিক চেম্বারে। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক না পেয়ে সরকারি এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন অসংখ্য রোগী।

বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের তুলনায় রোগীর অনেক ভিড়। টিকিট কাউন্টারে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালের স্টাফদের। টিকিট নিয়ে চিকিৎসকদের চেম্বারের সামনে দীর্ঘদিন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে রোগীদের।

চিকিৎসা নিতে আসা খাদিজা আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলে রোববার থেকে প্রচণ্ড জ্বরে ভুগছে। একটি ক্লিনিকে পরিচিত চিকিৎসকের চেম্বারে গিয়ে দেখলাম বন্ধ। জেলা সদর হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোথাও চিকিৎসক পাওয়া যাবে না। তাই এখানে ছেলেকে নিয়ে এসেছি।’

হাবিবুর রহমান নামের আরেকজন বলেন, ‘আমার হার্টে সমস্যা। শহরের কুমারশীল মোড়ে এক চিকিৎসকের কাছে নিয়মিত চিকিৎসা নিচ্ছি। উনার চেম্বার গেলে জানানো হয়, দুদিন প্রাইভেট কোনো রোগী দেখবেন না। উনি সরকারি এ হাসপাতালে বিকেলে রোগী দেখবেন, তাই এলাম।’

হাসপাতালের ১১২ নম্বর কক্ষে বসা অর্থোপেডিক চিকিৎসক মো. সোলায়মান  বলেন, শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে বৈকালিক চেম্বারে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ (সোমবার) হাসপাতালে দ্বিগুণের বেশি রোগী সেবা নিতে এসেছেন। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকায় রোগীর সংখ্যা এত বেশি হয়েছে।

বিএমএর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. আবু সাঈদ বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চিকিৎসকরা বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সেবা দেওয়া বন্ধ রেখেছেন। মঙ্গলবারও (১৮ জুলাই) তারা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেবেন না। কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে কর্মসূচি পালন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *