বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন মাথাপিছু আয়ে শীর্ষ সাতে ইউএই

স্টাফ রিপোর্টার

মাথাপিছু আয়ে সপ্তম স্থান দখল করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। শতভাগ বিদেশী মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানোর অনুমোদন, বুদ্ধিবৃদ্ধিক সম্পদ সুরক্ষার জন্য আইনি উদ্যোগ, তরুণদের আকর্ষণের জন্য নেয়া পদক্ষেপগুলো এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। পাশাপাশি কাজ করেছে সৃজনশীলতা ও দক্ষতা বাড়ানোর জন্য টেকসই অর্থনীতি গড়ে তুলতে সরকারের গৃহীত লক্ষ্যমাত্রা। বিশ্বব্যাংকের বরাত দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা ওয়াম। খবর দ্য ন্যাশনাল।

মাথাপিছু আয় নির্ধারিত হয়েছে ক্রয়ক্ষমতার সমতা বা পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটির (পিপিপি) ওপর ভিত্তি করে। সেদিক থেকে আরব আমিরাতে মাথাপিছু আয় গত বছর জুলাইয়ে দাঁড়িয়েছে ৮৭ হাজার ৭২৯ ডলার। অর্থাৎ ২০২১ সালের মাথাপিছু আয় থেকে বেড়েছে ১০ হাজার ৭৮১ ডলার। চলতি বছরের মার্চে দেয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির অর্থমন্ত্রী আবদুল্লা বিন তৌক বিদ্যমান অর্থনৈতিক গতিশীলতা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে জানান, আরব আমিরাতের অর্থনীতিতে মহামারীর অভিঘাতে যে মন্থরতা দেখা দিয়েছিল, জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য খাতের গতিশীলতার মধ্য দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে তা পুনরুদ্ধার হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে পদক্ষেপ। ফলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা, মূল্যস্ফীতি, মুদ্রানীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা ও সরবরাহ চেইনে অস্বাভাবিক থাকলেও আরব আমিরাত ভালো করেছে।

বিশ্বব্যাংক বৈশ্বিক অর্থনীতিকে চারটি ভাগে ভাগ করেছে। মাথাপিছু আয় ১ হাজার ১৩৫ ডলারের কম থাকা দেশগুলোকে রাখা হয়েছে নিম্ন আয়ের তালিকায়। মাথাপিছু আয় ১ হাজার ১৩৬ থেকে ৪ হাজার ৪৬৫ ডলারের মধ্যে থাকা দেশকে রাখা হয়েছে নিম্নমধ্যবিত্তের তালিকায়। মাথাপিছু আয় ৪ হাজার ৪৬৬ থেকে ১৩ হাজার ৮৪৫ ডলারের মধ্যে থাকা দেশগুলোকে রাখা হয়েছে উচ্চ মধ্যবিত্তের তালিকায়। উচ্চ আয়ের তালিকায় রয়েছে সে দেশগুলোর নাম, যাদের আয় ১৩ হাজার ৮৪৫ ডলার বা তার বেশি। প্রতি বছর ১ জুলাই এ তালিকায় পরিবর্তন করা হয়। এবারের তালিকায় সংযুক্ত আরব আমিরাত উচ্চ আয়ের দেশ হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।

১৯৮৭ সালে প্রতিবেদনের ৩০ শতাংশ দেশকে রাখা হয়েছিল নিম্ন আয়ের তালিকায়। ২০২২ সালে ১২ শতাংশ দেশ পড়েছে এ শ্রেণীতে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে মাথাপিছু জাতীয় আয় গত বছর ৪৮ হাজার ৯৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। বিপরীতে ২০২১ সালে মাথাপিছু জাতীয় আয় ছিল ৪৩ হাজার ৪৬০ ডলার। বর্তমান মাথাপিছু জাতীয় আয় কভিড-১৯ পূর্ব অর্থনৈতিক অবস্থাকে অতিক্রম করে গেছে, সে সময়ে সংখ্যাটি ছিল ৪৬ হাজার ২১০ ডলার।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের জিডিপি পৌঁছেছে ১ দশমিক ৬২ ট্রিলিয়ন আমিরাতি দিরহাম বা ৪৪ হাজার ২০০ কোটি ডলারে, যা গত বছরের তুলনায় ৭ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি। বিশেষ করে জ্বালানি তেলবহির্ভূত খাতের প্রবৃদ্ধি পালন করেছে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। গত বছরে প্রথমবারের মতো দেশটির তেলবহির্ভূত খাত ২ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। খাতটিতে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ছিল ১৭ শতাংশ। আরব বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশটি জ্বালানি তেলের ওপর নির্ভরতা কমানোর জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফল স্পষ্ট হয়েছে অর্থনীতি সূচকে। চলতি বছরে জ্বালানি তেলবহির্ভূত খাতে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে আরব আমিরাতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *