শেয়ারবাজারে অবশেষে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিললো
ঈদুল আজহার আগে টানা চার কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও ঈদের পর শেয়ারবাজারের শুরুটা ভালো হয়নি। ঈদের পর প্রথম দুই কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের পতন হয়। তবে তৃতীয় কার্যদিবসে এসে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে।
মঙ্গলবার (০৪ জুলাই ২০২৩)প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে। তবে দুই বাজারেই দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় রয়েছে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। অবশ্য সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে।
এর আগে ঈদুল আজহার আগে শেয়ারবাজারে টানা চার কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলে। ফলে কিছুটা স্বস্তি নিয়েই ঈদ উদযাপনে যান বিনিয়োগকারীরা। পাঁচদিন বন্ধ থাকার পর গত রোববার থেকে শেয়ারবাজারে আবার লেনদেন শুরু হয়েছে।
ঈদের পর প্রথম কার্যদিবসে লেনদেনের শুরুতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়লেও শেষ পর্যন্ত বড় হয় দরপতনের তালিকা। ফলে ঈদের পর প্রথম কার্যদিবসে দরপতন দেখতে হয় বিনিয়োগকারীদের। দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও শেয়ারবাজারে দরপতন হয়।
এ পরিস্থিতি মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের প্রথম এক ঘণ্টা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকে। এতে একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
কিন্তু দুপুর ১টার পর দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দরপতনের তালিকায় স্থান করে নিতে থাকে। ফলে দেখতে দেখতে বড় হয় দরপতনের তালিকা। অবশ্য এর মধ্যেও দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখে কিছু বড় মূলধনের প্রতিষ্ঠান। ফলে দরপতনের তালিকা বড় হলেও কোনো রকমে সবকটি মূল্যসূচক বেড়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ৭৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিপরীতে ১২০টির দাম কমেছে। আর ১৮১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৩৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৬৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৯৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। বাজারটিতে দিনভর লেনদেন হয়েছে ৬০০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬৭৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৭৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪১ কোটি ৮৩ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খান ব্রাদার পিপি ওভেন ব্যাগের ২৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জেএমআই হসপিটাল, ফু-ওয়াং সিরামিকস, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এমারেল্ড অয়েল, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস এবং জেমিনি সি ফুড।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭০টির এবং ৭৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।