ঊর্ধ্বমুখী জিরার দাম
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে জিরা আমদানি বাড়িয়েছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। এর পরও মসলাটির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে কেজিতে ৮০ টাকা।
আমদানিকারকদের্ দাবি, ভারতে সরবরাহ ঘাটতির কারণে সেখানেই দাম ঊর্ধ্বমুখী। এছাড়া ডলার রেট বাড়ার কারণে বাড়তি শুল্ক দিতে হচ্ছে। ফলে বেশি দামে জিরা আমদানি করতে হচ্ছে। এ কারণেই আমদানি বাড়লেও দাম কমেনি।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে জানুয়ারি মাসে ৩৯টি ট্রাকে ১ হাজার ৫৭ টন জিরা আমদানি হয়েছিল। ফেব্রুয়ারি মাসে আমদানির পরিমাণ কিছুটা বেড়ে ১ হাজার ২৩৭ টনে উন্নীত হয়। মার্চে ব্যাপকহারে জিরা আমদানি হয়। এ সময় বন্দর দিয়ে ১৫৬টি ট্রাকে ৪ হাজার ২৭৬ টন জিরা দেশে ঢোকে। এপ্রিল মাসে ৮৫টি ট্রাকে ২ হাজার ৩৯১ টন জিরা আমদানি হয়েছে। মে মাসে আমদানির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৮২৯ টন। চলতি মাসে বন্দর দিয়ে জিরার আমদানি কিছুটা বেড়েছে। ১৯ জুন পর্যন্ত ১২ কর্মদিবসে ৪৯টি ট্রাকে ১ হাজার ৪০২ টন জিরা আমদানি হয়েছে।
হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব দোকানেই জিরার ব্যাপক সরবরাহ আছে। তার পরও দাম বাড়তি। গত সপ্তাহে যে জিরা ৭৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছিল, তা বর্তমানে দাম বেড়ে ৮৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
হিলি বাজারের মসলা বিক্রেতা গোলাম মর্তুজা শিফাত বলেন, ‘সরবরাহ ঘাটতি দেখা দেয়ায় ঈদুল ফিতরের পরই জিরার দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে আমদানি বাড়তে শুরু করলে দামও কমতে শুরু করে। কিন্তু এক সপ্তাহের ব্যবধানে জিরার দাম আবারো বাড়ল। মোকামেই দাম বাড়তি। ফলে আমরা বাড়তি দামে কিনে সে দামেই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।’
হিলি স্থলবন্দরের জিরা আমদানিকারক ললিত কেশেরা বলেন, ‘আর কয়েকদিন পরই ঈদুল আজহা। এ সময় দেশের বাজারে মসলার বাড়তি চাহিদা থাকে। সে কথা মাথায় রেখেই বন্দর দিয়ে জিরা আমদানি বাড়িয়েছেন আমদানিকারকরা। তবে আমদানির পরিমাণ বাড়লেও দেশের বাজারে জিরার দাম বাড়ছে।’
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘দেশে যে পরিমাণ জিরার চাহিদা আছে, সে পরিমাণ জিরা আমদানি সম্ভব হচ্ছে না। আমদানিতে প্রচুর পরিমাণ ডলারের প্রয়োজন। এ কারণে সব ব্যাংক জিরার এলসি খুলতে চায় না। এছাড়া অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ভারতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জিরার উৎপাদন খানিকটা কম হয়েছে। এতে করে সে দেশেই দাম বাড়তি। ডলার রেট বাড়ার কারণে কেজিপ্রতি ১৫ টাকার মতো বাড়তি শুল্ক দিতে হচ্ছে। আগে প্রতি কেজি জিরার আমদানি শুল্ক বাবদ পরিশোধ করতে হতো ১০৫ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে ১২০ টাকা হয়েছে। ভারত থেকে প্রতি টন জিরা প্রকারভেদে ১ হাজার ৭৫০ ডলার থেকে ১ হাজার ৮৫০ ডলার মূল্যে আমদানি হচ্ছে। কাস্টমস প্রতি টন জিরা ১ হাজার ৮৫০ ডলার মূল্য হিসেবে শুল্কায়ন করছে।’
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘ঈদুল আজহাকে ঘিরে সম্প্রতি বন্দর দিয়ে জিরার আমদানি বেড়েছে। সোমবার একদিনেই সাত ট্রাকে ১৯৯ টন জিরা আমদানি হয়েছে।’