রেকর্ড মুনাফার পথে জাপানের প্রধান কোম্পানিগুলো
চলতি অর্থবছরে রেকর্ড মুনাফার আশা করছে শীর্ষ জাপানি কোম্পানিগুলো। গাড়ি শিল্পে টানা তৃতীয়বারের মতো রেকর্ড মুনাফা পেতে যাচ্ছে তারা। সিকিউরিটিজ হাউজের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপানের গাড়ি নির্মাণ শিল্প, পর্যটন ও এভিয়েশন শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে, ২০২৩ অর্থবছরে প্রধান কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত নিট মুনাফা ৪ শতাংশ বেড়ে ৪২ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ইয়েন বা ৩০ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে।
এসএমবিসি নিক্কো সিকিউরিটিজের তথ্য অনুযায়ী, টোকিও স্টক মার্কেটের প্রায় ১ হাজার ৪০০টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির আয়ের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের (২০২৪ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত) প্রত্যাশিত মুনাফা গত অর্থবছরের ৪১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ইয়েনের সামষ্টিক নিট মুনাফাকে ছাড়িয়ে যাবে। বাজারের ৩৩টি সেক্টরের মধ্যে পরিবহন যন্ত্রাংশ খাতে নিট মুনাফা (যার মধ্যে অটোমেকাররা রয়েছে) ২০২৩ অর্থবছরে ১১ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। চিপ সরবরাহের সংকট সহজ হওয়ায় এবং মহামারী-পরবর্তী সময়ে গাড়ির উৎপাদন বাড়ায় আশার আালো দেখছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
টয়োটা মোটরের প্রত্যাশা, এ অর্থবছরে তাদের নিট মুনাফা ৫ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ২ দশমিক ৫৮ ট্রিলিয়ন ইয়েন হবে। যেখানে গত অর্থবছরের প্রতিষ্ঠানটি ১৪ শতাংশ লোকসানে ছিল। আয় বাড়ানোর দৌড়ে পিছিয়ে নেই হোন্ডা মোটর ও নিশানও। চলতি অর্থবছরে তাদের নিট মুনাফা হতে পারে যথাক্রমে ১৫ দশমিক ১ ও ৪২ শতাংশ। এসএমবিসি নিক্কোর ইকুইটি বিশ্লেষক হিকারু ইয়াসুদা বলেন, ‘গাড়ি নির্মাতারা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তারা জাপানি কোম্পানিগুলোর মোট মুনাফাকে বাড়িয়ে তুলবে।’
কভিডের বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার ফলে জাপানের পর্যটন শিল্পও প্রবৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে। পর্যটক বাড়ার অর্থ হলো দেশীয় খুচরা বিক্রেতা, হোটেল অপারেটর ও পরিবহন সংস্থাগুলো পুনরুজ্জীবিত হবে। অন্যদিকে এসএমবিসি নিক্কোর তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে উড়োজাহাজ পরিবহন শিল্পে নিট মুনাফা ৯ শতাংশ বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে যাত্রী বাড়ার ফলে জাপান এয়ারলাইনস করপোরেশনও তিন বছরের মধ্যে ২০২৩ অর্থবছরে ৫৯ দশমিক ৯ শতাংশ নিট লাভের হিসাব কষছে। তাবে ব্যবসায়ী নেতারা সামনের দিনগুলোর ঝুঁকির ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য মন্দা পরিস্থিতির কথা মাথায় রাখার কথা বলছেন তারা।
সনি গ্রুপ করপোরেশনের প্রেসিডেন্ট হিরোকি তোটোকি গত এপ্রিলে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমরা খুব একটা আশাবাদী নই। কারণ অনেক দেশ কঠোর মুদ্রানীতির পথে হাঁটছে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি বিচ্ছিন্নতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’ সনি গ্রুপের ধারণা, ২০২৪ সালের মার্চে শেষ হতে যাওয়া অর্থবছরে তাদের বিক্রয় দশমিক ৩ শতাংশ কমে যাবে এবং নিট মুনাফা ১০ দশমিক ৪ শতাংশ কমে যাবে।