অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে আবুধাবি

স্টাফ রিপোর্টার

মধ্যপ্রাচ্যের দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনৈতিক অঞ্চল আবুধাবি। ২০২২ সালে অঞ্চলটির জিডিপি বেড়েছে ৯ দশমিক ৩ শতাংশ। যেখানে জ্বালানি তেলবহির্ভূত অন্যান্য খাতের অবদান ছিল ৫০ শতাংশ। পরিসংখ্যান কেন্দ্র আবুধাবি (এসসিএডি) প্রকাশিত সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। খবর অ্যারাবিয়ান বিজনেস।

প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, জ্বালানি তেলবহির্ভূত অন্যান্য খাতের মধ্যে ছিল আবাসন, স্বাস্থ্যপরিষেবা ও নির্মাণ স্থাপনা। আবুধাবির অর্থনীতিতে এ বৃদ্ধি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনৈতিক লক্ষ্যমাত্রার অন্তর্ভুক্ত। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সরকারি ও বেসরকারি খাত সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করছে। আন্তর্জাতিক পরিসরে মজবুত করে ফেলেছে নিজের অবস্থান। একইভাবে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নেয়া হয়েছে পরিকল্পনা।

বর্তমান অর্থনৈতিক সফলতা মূলত আবধাবির বৈচিত্র্যপূর্ণ কৌশলপত্রের সার্থকতাকেই তুলে ধরে। কৌশলপত্র তৈরিতে নেতৃত্ব দিয়েছিল আবুধাবি ডিপার্টমেন্ট অব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (এডিডিইডি)। সেখানে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, পরিচালন নীতিমালা, অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ও সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য অবকাঠামোগত উদ্যোগ গ্রহণে জোর দেয়া হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক বহুমাত্রিকতা সৃষ্টির কথাও বলা হয়। গত বছর গ্রহণ করা সিদ্ধান্তে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে নীতিমালায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। রাখা হয় সরাসরি বিনিয়োগের সুযোগ। অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বাড়াতে পৃষ্ঠপোষকতার কথাও বলা হয়।

আবুধাবি ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্ট্র্যাটেজি (এডিআইএস) প্রতিষ্ঠিত হয় ২০২২ সালের জুনে। তখন থেকেই ভূমিকা রাখতে শুরু করে দেশের অর্থনীতিকে বহুমুখী করার জন্য। এডিআইএস মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে শীর্ষে তুলেছে। ক্রমেই দেশটি পরিণত হচ্ছে শিল্প ও বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্রে। বিভিন্ন প্রকল্প মিলিয়ে ১ হাজার কোটি আমিরাতি দিরহাম বিনিয়োগ করা হয়েছে। তৈরি করেছে ১৩ হাজার ৬০০টি নতুন কর্মসংস্থান। জ্বালানি তেলবহির্ভূত অন্যান্য খাতের আয়তন ২০৩১ সাল নাগাদ ১৭ হাজার ৮৮০ কোটি আমিরাতি দিরহামে উন্নীতের লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়েছে।

আবুধাবি ডিপার্টমেন্ট অব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের (এডিডিইডি) চেয়ারম্যান আহমেদ জসিম আল জাবি বলেন, ‘আবুধাবির শক্তিশালী অর্থনৈতিক অবস্থাই প্রমাণ করে যে নেতৃত্বের দূরদৃষ্টি ও অর্থনৈতিক কৌশলের বৈচিত্র্য আনয়নে আমরা সফল। সরকারি ও বেসকারি খাতের অংশীদারত্বের পাশাপাশি দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে আমরা লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করেছি।’

আবুধাবির ফ্যালকন ইকোনমিকে চিহ্নিত করা হয়েছে বর্ধনশীল, উদারনৈতিক ও বহুমুখী অর্থনীতি হিসেবে, যা পরিচালিত হয় কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রা ও টেকসই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। সামাজিক ও মানবিক উন্নয়নের বিষয়াবলিকে দেয়া হয় সর্বোচ্চ প্রাধান্য। আহমেদ জসিম আল জাবির ভাষ্যানুসারে, অর্থনীতিকে আরো সমৃদ্ধ করা হবে ডিজিটাল পরিবহন, আবিষ্কার ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে। বাস্তবায়ন আনা হবে সামাজিক পরিকল্পনায়। অন্যদিকে স্ট্যাটিসটিকস সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ গারিব আল কেমজি বলেন, ‘‌জ্বালানি তেলবহির্ভূত অন্যান্য খাত থেকে আবুধাবির সফলতা সন্তোষজনক। ২০২২ সালের জিডিপি বৃদ্ধি দিয়েই মূলত অর্থনৈতিক খাতগুলোয় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি প্রমাণিত হয়।’

স্ট্যাটিসটিকস সেন্টার আবুধাবির প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে বছরওয়ারি প্রকৃত জিডিপি ৫ দশমিক ৯ শতাংশ বা ২৭ হাজার ৮৩০ কোটি আমিরাতি দিরহাম বেড়েছে। জিডিপিতে জ্বালানি তেলবহির্ভূত অন্যান্য খাতের অবদান ৫০ দশমিক ২ শতাংশ বা ১৩ হাজার ৯৬০ কোটি ডলার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *