সম্প্রসারণ হচ্ছে প্রকল্প, রপ্তানি সক্ষমতা বাড়ানার

স্টাফ রিপোর্টার

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, জুতা, হালকা প্রকৌশল ও প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানি সক্ষমতা বাড়াতে ‘এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জব (ইসিফোরজে)’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এ প্রকল্পে আরও দুটি নতুন কম্পোনেন্ট বা অংশ যুক্ত হচ্ছে। এ জন্য প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়ার পাশাপাশি ব্যয়ও বাড়ছে।

মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল ‘২৩)রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ২০১৭ সালে ৯৪১ কোটি টাকায় ইসিফোরজে প্রকল্প গ্রহণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ প্রকল্পের আওতায় দেশব্যাপী ২৪টি জেলায় চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, জুতা, হালকা প্রকৌশল ও প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন এবং রপ্তানিতে সহায়তা করা হচ্ছে। এর মেয়াদ ২০২৩ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল।

২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে যাবে বাংলাদেশ। তখন রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আরও বাড়ার পাশাপাশি পণ্য উৎপাদনে পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি জরুরি হয়ে উঠবে। সম্ভাব্য ওই পরিস্থিতি মোকাবিলা করে রপ্তানি প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে নতুন দুটি কম্পোনেন্ট যুক্ত করে ইসিফোরজে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

সংশোধিত প্রস্তাবনায় নতুন কম্পোনেন্ট হিসেবে মার্কেট এক্সেস সাপোর্ট প্রোগ্রাম অনুর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর আওতায় এনভায়রনমেন্টাল সোশ্যাল অ্যান্ড কোয়ালিটি (ইএসকিউ) সহায়িকা তৈরি ও সচেতনতা বাড়ানো হবে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাদুকা, প্লাস্টিক এবং হালকা প্রকৌশল খাতের কারখানা পর্যায়ে ইএসকিউ কমপ্লায়েন্স অর্জনে বিনিয়োগ সহায়তা দেওয়া হবে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) ও চিকিৎসাসামগ্রী উৎপাদন খাতকেও বিনিয়োগ সহায়তা দেওয়া হবে। এ ছাড়া রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে ব্রান্ডিং এবং সোর্সিং শোর আয়োজন করা হবে।

দ্বিতীয় কম্পোনেন্টের আওতায় দুটি টেকনোলজি সেন্টার স্থাপন করা হবে। এ জন্য প্রায় ৩০ একর জমির প্রয়োজন হবে। এ ছাড়া আরও চারটি টেকনোলজি সেন্টারের ডিজাইন-ড্রইং, টেকনোলজি রোডম্যাপ প্রস্তুত, প্রয়োজনীয় টেকনোলজি ও মেশিনারিজ ক্রয়ে দরপত্র চূড়ান্ত করা হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লাস্টিক অ্যান্ড টেকনোলজির কমন ফ্যাসিলিটিস সেন্টার ভবনের ভার্টিক্যাল সম্প্রসারণসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামোগত সুবিধা নির্মাণ করা হবে।

এসব কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পাদন করার জন্য প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে তৃতীয় দফায় ব্যয় বাড়িয়ে ১ হাজার ১০৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের ঋণ ৯৩৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং সরকারের অর্থের পরিমাণ ১৭২ কোটি ১২ লাখ টাকা। এর আগে এ প্রকল্পের মেয়াদ না বাড়ানো হলেও ব্যয় ৯৪১ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ১২ কোটি টাকা করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ইসিফোরজে প্রকল্পের পরিচালক মো. মনছুরুল আলম বলেন, এ প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল দুটি টেকনোলজি সেন্টার স্থাপন। এ সেন্টার দুটি স্থাপনে মোট ব্যয় হবে ৫২৫ কোটি টাকা। কিন্তু প্রথম সংশোধনীতে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ১৪৫ কোটি টাকা। তাই এই প্রকল্পেরই অন্য অংশের টাকা সমন্বয় করে আবারও সংশোধনীর প্রয়োজন হচ্ছে। তাছাড়া ২০২০ সালের পর করোনা মহামারির কারণে এ প্রকল্পের কার্যক্রম পিছিয়ে গেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এ প্রকল্পে পণ্যের উৎপাদন দক্ষতা বাড়ানো, শ্রমঘন শিল্পকে অগ্রাধিকার প্রদান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ, রপ্তানিমুখী শিল্পের উৎপাদন বাড়ানো, আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদন, শিল্প উৎপাদনে বেসরকারি খাতের প্রসার, উৎপাদন বহুমুখীকরণ এবং শিল্প উৎপাদনে প্রতিযোগিতা বাড়ানোর ওপর অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ, শিল্পায়ন বাড়ানো এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে ভূমিকা রাখবে বলে প্রস্তাবে বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *