বেশি দরে ডলার কেনা যাবে না ঘোষণার চেয়ে
ঘোষণার চেয়ে বেশি দরে ডলার না কিনতে ব্যাংকগুলোকে আবারও অনুরোধ জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে রপ্তানি বিল নগদায়নে ১০৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০৫ টাকা করা হয়েছে। তবে রেমিট্যান্সে ১০৭ টাকা অপরিবর্তিত থাকবে। আর রেমিট্যান্স ও রপ্তানি বিল নগদায়নের সঙ্গে সর্বোচ্চ এক টাকা যোগ করে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রি করা হবে। বৃহস্পতিবার ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদার যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
বেশ আগে থেকে ডলারের দর ঠিক করলেও অনেক ব্যাংক তা মানছে না। কিছু ব্যাংক এখন বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে ডলার কিনছে ১১২ থেকে ১১৪ টাকায়। আবার এই ডলার বিক্রি করছে ১১৫ থেকে ১১৬ টাকায়। যদিও ব্যাংকগুলো নথিপত্রে নির্ধারিত দরই দেখাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাড়তি অংশ অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে পরিশোধ করা হচ্ছে। ঘোষণার চেয়ে বেশি দরে ডলার কেনায় নিয়ম মেনে চলা ব্যাংক ডলার কম পাচ্ছে। এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার ‘ব্যাংকেই ডলারের কালোবাজার’ শিরোনামে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এরপর ঘোষণার চেয়ে বেশি দরে ডলার কেনা ব্যাংকগুলোতে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানা গেছে, গতকাল ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সভায় বিভিন্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছাড়াও ট্রেজারি বিভাগের প্রধানদের যুক্ত হতে বলা হয়। সেখানে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যস্থতায় ব্যাংকগুলো বসে ডলারের দর ঠিক করছে। কোনো একটি ব্যাংক বাড়তি দর দিলে বাজারে অস্থিরতা আরও বাড়বে। এ রকম অবস্থায় ঘোষণার চেয়ে বেশি দর দিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
বৈঠকে উপস্থিত ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, রপ্তানি বিল নগদায়নে প্রতি ডলারে এতদিন ১০৪ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। এখন থেকে ১০৫ টাকা দেওয়া হবে। এ ছাড়া অন্য সব ক্ষেত্রে দর অপরিবর্তিত থাকছে। যে ব্যাংক যে দর ঘোষণা করবে তার চেয়ে বেশি দরে না কেনার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
চরম সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো গত বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বর সময়ে ১১৪ টাকা পর্যন্ত দরে ডলার কিনছিল। এক বছর আগেও যেখানে দর ছিল ৮৬ টাকা। অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির প্রভাবে আমদানিতে ব্যয় অনেক বেড়ে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এ রকম বাস্তবতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যস্থতায় গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ডলার কেনায় সর্বোচ্চ দর নির্ধারণ করে আসছে ব্যাংকগুলো। শুরুতে রেমিট্যান্সে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা এবং রপ্তানি বিল নগদায়নে ৯৯ টাকা দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে দুয়ের মধ্যে দরের পার্থক্য কমাতে রেমিট্যান্সে দু’দফায় এক টাকা কমানো হয়েছে। আর রপ্তানি বিল নগদায়নে দর একটু করে বাড়িয়ে এ পর্যায়ে আনা হয়েছে।