সূচকের বড় লাফ

স্টাফ রিপোর্টার

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের দাম। পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে সাড়ে ছয়শ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, যা প্রায় একমাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি লেনদেন বাড়লেও এদিন তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা সংকট দেখা যায়। ক্রেতা সংকটে পড়ে লেনদেনের শেষ দিকে প্রায় দুইশ প্রতিষ্ঠানের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে। অন্যদিকে দিনের সর্বনিম্ন দামে এসব প্রতিষ্ঠানের বিপুল বিক্রির আদেশ আসে। ফলে যাদের কাছে এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট রয়েছে ক্রেতা সংকটে তারা তা বিক্রি করতে পারেননি।

এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই মূল্যসূচকের বড় উত্থানের আভাস পাওয়া যায়। প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে লেনদেন শুরু হওয়ায় প্রথম মিনিটেই ডিএসই’র প্রধান সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই বড় উত্থান প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এমনকি লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বাড়ে। সেই সঙ্গে বড় হয় দাম বাড়ার তালিকা।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৫২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪টির। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭৪টির। দাম বাড়ার তালিকায় থাকায় ৭টির দাম দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ বেড়েছে। এছাড়া ৩ শতাংশের ওপরে দাম বেড়েছে ৭৪টির। এর মধ্যে ৩৪টির দাম বেড়েছে ৫ শতাংশের ওপরে।

এমন বাজারেও ১৭৮টি প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা সংকট দেখা দেয়। ক্রেতা সংকটে পড়া এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭৪টি আগে থেকেই ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। ৩টি প্রতিষ্ঠানের দাম কমে নতুন করে ফ্লোর প্রাইসে এসে ঠেকেছে। আর একটির দাম দিনের সর্বোচ্চ পরিমাণ কমেছে।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসই-এক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৬ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৫০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২২৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৬২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৬২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪২৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২৩৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ৮ ফেব্রুয়ারির পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।

টাকার অঙ্কে বাজারটিতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৮ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেনেক্স ইনফোসিসের ৩৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৭ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এডিএন টেলিকম।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ইস্টার্ন হাউজিং, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, বসুন্ধরা পেপার, ওরিয়ন ফার্মা এবং শাহিনপুকুর সিরামিকস।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১২০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৪৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টির দাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *