রাশিয়ার স্মার্টফোন ও গাড়ির বাজার এখন চীনের দখলে
ইউক্রেনে আক্রমণের প্রেক্ষাপটে গত এক বছরে শত শত বৈশ্বিক ব্র্যান্ড রাশিয়া ছেড়ে গেছে। এ কারণে স্মার্টফোন থেকে গাড়ি পর্যন্ত প্রায় সব কিছুর বিকল্প খুঁজতে বাধ্য হয়েছে রুশ নাগরিকরা। সেই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছেন চীনের উৎপাদকরা। খবর সিএনএন।
এখন আইফোনের বদলে রাশিয়ার বাজারে শাসন করছে চীনা স্মার্টফোন জায়ান্ট শাওমি। আবার হুন্দাইয়ের মতো অটোমেকারের স্থলে বিক্রি বেড়েছে জিলির।
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ অনুসারে, এক সময় রাশিয়ায় বেস্টসেলার ছিল আইফোন ও স্যামসাং গ্যালাক্সি। এখন শীর্ষে রয়েছে শাওমি ও রিয়েলমি ব্র্যান্ড।
অবশ্য যুদ্ধের আগ থেকেই রাশিয়ায় চীনা ডিভাইস জনপ্রিয় ছিল। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে স্মার্টফোন বাজারের প্রায় ৪০ শতাংশে তাদের দখল ছিল। এক বছরের ব্যবধানে এখন ৯৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় পুরোটাই সম্প্রসারিত হয়েছে। একই সময়ে রাশিয়া থেকে বের হয়ে যাওয়া স্যামসাং ও অ্যাপলের সম্মিলিত বাজার ৫৩ শতাংশ থেকে নেমে গেছে ৩ শতাংশে।
চীনের তিন ব্র্যান্ড শাওমি, রিয়েলমি ও হনারের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, আগের প্রান্তিকের তুলনায় ২০২২ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) তাদের চালান বাড়ে যথাক্রমে ৩৯ শতাংশ, ১৯০ শতাংশ ও ২৪ শতাংশ।
একই ছাপ পড়েছে মোটর গাড়ির ক্ষেত্রে। যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার রাস্তা থেকে অদৃশ্য হয়ে গেছে বিএমডব্লিউ ও মার্সিডিজ। এখন শীর্ষ ১০ ব্র্যান্ডে যুক্ত হয়েছে চীনের চেরি ও গ্রেট ওয়াল। এরপর আছে জিলি।
তথ্য বিশ্লেষক অটোস্ট্যাট অনুসারে, রাশিয়ানরা গত বছর রেকর্ড সংখ্যক চীনা গাড়ি কিনেছে। ২০২২ সালে দেশটিতে চীনা নতুন গাড়ির বিক্রয় ৭ শতাংশ বেড়ে এক লাখ ২১ হাজার ৮০০ হয়েছে। একই সময়ে দেশীয় ব্র্যান্ড লাডার বাজার শেয়ার ২২ শতাংশ থেকে বেড়েছে ২৮ শতাংশ। অবশ্য এর আগে রেনাল্ট মে মাসে নিজেদের শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছে লাডার কাছে।
তবে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সুযোগে রাশিয়ায় চীনের বিক্রি বাড়লেও অর্থনৈতিক মন্দায় সামগ্রিক বাজার সংকুচিত হয়েছে। কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ অনুসারে, গত বছর রাশিয়ায় স্মার্টফোন বিক্রি ৩৩ শতাংশ কমে দুই কোটি ১০ লাখ হয়েছে। তুলনামূলকভাবে, ইউরোপের স্মার্টফোনের বাজার ২০ শতাংশ কমেছে।
অটোস্ট্যাটের মতে, রাশিয়ার গাড়ির বাজার আরো খারাপ হয়েছে। ২০২২ সালে আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৬০ শতাংশ বিক্রি হ্রাস পায়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধ শেষ হলে রাশিয়ার বাজার পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। তখন পশ্চিমা ব্র্যান্ডগুলো হারানো বাজার দখলে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। এই প্রতিযোগিতায় তাদের মূল প্রতিপক্ষ হবে চীনের কোম্পানিগুলো।