তেলের উৎপাদন বাড়াবে না সৌদি আরব

স্টাফ রিপোর্টার

চাহিদা বৃদ্ধির পরও জ্বালানি তেলের উৎপাদন না বাড়লে দাম আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। তবে এমন পরিস্থিতিতেও অপরিশোধিত তেলের উৎপাদন না বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশ সৌদি আরব। দেশটি বলছে, তারা তেল উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করবে।

দেশটির জ্বালানি বিষয়কমন্ত্রী প্রিন্স আব্দুল আজিজ বিন সালমান বলেন, তেল উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়ে সৌদি আরব এখনকার মতোই সতর্কতা অবলম্বন করবেন। যদি আমি দেখি এমন পরিস্থিতি (চাহিদা বৃদ্ধি) তৈরি হচ্ছে, তখন আমরা ব্যবস্থা নেব।

রিয়াদে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড্যানিয়েল ইয়েরগিনের সঙ্গে আলোচনাকালে তিনি জানান, জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী দেশগুলোর সংস্থা ওপেক গত অক্টোবরে কম তেল উত্তোলনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তা সঠিক প্রমাণিত হয়েছে।

জ্বালানি উৎপাদকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আগামীতে পরিস্থিতি কঠিন করে তুলতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রিন্স আব্দুল আজিজ বলেন, এসব নিষেধাজ্ঞা-বিধিনিষেধের ফলাফল শুধু একটা হতে পারে সেটা হলো—যখন মানুষের প্রয়োজন তখন জ্বালানির অপ্রতুলতা। এটা দুশ্চিন্তার বিষয়।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি উত্তোলন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অব্যাহতভাবে ব্যর্থ হচ্ছে জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক। চলতি মাসেও সীমিত আকারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন নীতিতে অটল ওপেক প্লাস। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জোটটি। সীমিত উত্তোলনের কারণে শীর্ষ ব্যবহারকারী দেশগুলোয়ও সরবরাহ বাড়ানো যাচ্ছে না। ফলে ক্রমেই বাড়ছে জ্বালানি পণ্যটির দাম।

সরবরাহ সংকট কাটাতে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও বেশ কয়েকটি দেশ জোটটিকে উত্তোলন বাড়ানোর আহ্বান জানায়। কিন্তু এসব আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে বিদ্যমান নীতিতেই অটল জোটটি। এরই ধারাবাহিকতায় তেলের উত্তোলন না বাড়ানোর ইঙ্গিত দিল সৌদি আরবও।

এর মধ্যে বিশ্বের উন্নত সাত দেশের জোট জি৭, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অস্ট্রেলিয়া সম্প্রতি সমুদ্রপথে রফতানি করা রাশিয়ান অপরিশোধিত তেলের মূল্য ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারে নির্ধারণ করে দিয়েছে। তেল রফতানি থেকে রাশিয়ার আয় কমানোর জন্য পশ্চিমা দেশগুলো এমন চেষ্টা করছে বলে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ক্রেমলিন। দেশটি বলছে তারা পশ্চিমাদের বেঁধে দেয়া দর মানবে না।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়া যদি পশ্চিমাদের বেঁধে দেয়া দামে তেল বিক্রি না করে উৎপাদন কমিয়ে দেয়, তাহলে ভবিষ্যতে তেল জোগানে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। উল্লেখ্য, সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের পর রাশিয়া বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *