বাংলাদেশে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ রপ্তানি অনিশ্চিত

স্টাফ রিপোর্টার

বাংলাদেশে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ রপ্তানি প্রকল্পের বিরোধিতা করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করেছে পশ্চিমবঙ্গের ৩০ চাষি। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) মামলাটি গ্রহণ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। আর এতেই বিদ্যুৎ রপ্তানির ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

ঝাড়খণ্ড থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলা হয়ে আদানির বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু গত বছরই কৃষি জমি নষ্টের অভিযোগ তুলে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কার চাষিরা। গত বছরের জুলাই মাসে এই নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে গ্রামবাসীরা। আহত হয় একাধিক গ্রামবাসী ও পুলিশ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না দিয়েই জোরপূর্বক আম-লিচু বাগানের উপর দিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের লাইন বাংলাদেশে নিয়ে যাচ্ছেন আদানি।

গ্রামবাসীদের দাবি এলাকাটি জনবসতিপূর্ণ। সেখানে আমগাছ, লিচুগাছ রয়েছে। ওই আম-লিচুর ফলনের ওপর নির্ভরশীল স্থানীয়রা। তা থেকেই জীবন অতিবাহিত হয় তাদের। কিন্তু ওই ফসলি জমির ওপর দিয়ে বিদ্যুতের ক্যাবল গেলে ফলনের উপর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন তারা। তাই অন্য দিক থেকে বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন গ্রামবাসী। কিন্তু রাজ্য প্রশাসন ও আদানি গ্রুপ সেই প্রস্তাব নাকচ করে।

এমন অবস্থায় জুলাই মাসেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন লুৎফর রহমান নামে এক ফল চাষী। সেই সময় বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যর গোটা মামলা শোনার পরে আদানি গ্রুপের জমি কেনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে বিদ্যুতের খুঁটি বসানো হওয়ায়, তাদের আদানির প্রকল্পের নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় রাজ্য সরকারকে।

একইসঙ্গে মুর্শিদাবাদের জেলাশাসককে ফারাক্কা এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন তিনি। বলা হয়, ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ক্ষেত্রে মুর্শিদাবাদের জেলাশাসকের কাছে আবেদন করতে হবে। তিনি ক্ষতিপূরণের বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

কিন্তু দীর্ঘ ৬ মাসে রাজ্য সরকারের নিরাপত্তায় আদনির সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ হলেও ক্ষতিপূরণ মেলেনি চাষিদের। এমন অবস্থায় ফের আদানি গ্রুপের ও রাজ্য সরকারকে অভিযুক্ত করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ফারাক্কার ৩০ ফল চাষি।

তাদের হয়ে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন সিনিয়র আইনজীবী ঝুমা সেন। আদালতও মঙ্গলবার এই মামলাটি গ্রহণ করেছে। ফলে বাংলাদেশের আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা অনিশ্চিত দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি শুনানি দিন ধার্য করেছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *