রেকর্ডসংখ্যক গাড়ি বিক্রি রোলস রয়েসের

স্টাফ রিপোর্টার

বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে সুদের হার বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের কারণে অতিপ্রয়োজনীয় নয়- এমন পণ্যে ব্যয় কমিয়ে দিয়েছেন ভোক্তারা। সব মিলিয়ে অর্থনীতিতে মন্দার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। তবে এমন পরিস্থিতিতেও ব্যয় অব্যাহত রেখেছেন অতিধনীরা। এটির সবচেয়ে বড় ইঙ্গিত হলো, গত বছর রোলস-রয়েসের রেকর্ডসংখ্যক গাড়ি বিক্রি। বৈশ্বিক অটোমোবাইল শিল্পের চাহিদায় মন্দার ঝুঁকি সত্ত্বেও ব্রিটিশ বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি ছয় হাজার ইউনিটেরও বেশি গাড়ি বিক্রি করেছে। খবর সিএনবিসি।

রোলস-রয়েসের প্রধান নির্বাহী টর্স্টেন মুলার-ওটভোসের মতে, আমরা গাড়ি বিক্রিতে কোনো মন্দা বা ধীরগতি দেখিনি। এ শিল্পে আমরা কোনো নেতিবাচক প্রভাবও দেখিনি।

রোলস-রয়েস গত বছর ৬ হাজার ২১ ইউনিট গাড়ি সরবরাহ করেছে। এ সংখ্যা ২০২১ সালের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি। এ নিয়ে প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক গাড়ি বিক্রি ছয় হাজার ইউনিট ছাড়িয়ে গেছে। জার্মান গাড়ি নির্মাতা বিএমডব্লিউর মালিকানাধীন ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানটি আয় কিংবা মুনাফার তথ্য প্রকাশ করে না। তবে সংস্থাটি জানিয়েছে, গত বছর রোলস-রয়েস গাড়ির গড় দাম ৫ লাখ ৩৪ হাজার ডলারে উন্নীত হয়েছে। মূলত বেসপোক নামে পরিচিত কাস্টমাইজেশন প্রোগ্রামে উচ্চব্যয়ের কারণে সংস্থাটির গাড়ির গড় দাম বেড়ে গেছে। বেসপোক কমিশনের মাধ্যমে গ্রাহক নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী গাড়ির ডিজাইন করিয়ে নিতে পারে।

সম্প্রতি সংস্থাটি দুবাইয়ে নির্দিষ্ট গ্রাহকদের জন্য একটি প্রাইভেট অফিস খুলেছে। এ অফিসের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের ভিআইপি ও বেসপোক গ্রাহকদের সেবা দিতে চায় সংস্থাটি। হাই-বেসপোক যানবাহনের চাহিদার দিক থেকেও শীর্ষে রয়েছে অঞ্চলটি। রোলস-রয়েস জানিয়েছে, আগামী মাসগুলোয় বিশ্বজুড়ে আরো এ ধরনের প্রাইভেট অফিস খোলা হবে।

তবে সামগ্রিকভাবে ২০২২ সালে রোলস-রয়েসের বৃহত্তম বাজার ছিল যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বজুড়ে বিক্রীত গাড়ির প্রায় ৩৫ শতাংশই বিক্রি হয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে। যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি বিক্রি বাড়লেও সংস্থাটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার চীনে বিক্রি কিছুটা কমেছে। তার পরও সংস্থাটির বৈশ্বিক বিক্রির ২৫ শতাংশই দেশটিতে বিক্রি হয়েছে। টর্স্টেন মুলার-ওটভোস বলেন, কভিডজনিত নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়ায় এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কারণে ভবিষ্যতে আমাদের বৃহত্তম বাজারে পরিণত হবে চীন। আমি আশা করছি বাজারটিতে আমাদের বেশ চমকপ্রদ ব্যবসা হবে। বিশেষ করে দেশটিতে বিলাসবহুল গাড়ির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ২০২২ সালে সংস্থাটির সবচেয়ে বেশি বিক্রীত গাড়ি কুলিনান নামের স্পোর্ট ইউটিলিটি ভেহিকল (এসইউভি)। বৈশ্বিক বিক্রিতে অর্ধেক অবদানই এ মডেলের। পাশাপাশি বৈশ্বিক বিক্রির ৩০ শতাংশ ঘোস্ট মডেল এবং প্রায় ১০ শতাংশ অবদান ফানটুম মডেলের।

২০২২ সালে প্রথম পূর্ণাঙ্গ বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি উন্মোচন করেছিল রোলস-রয়েস। স্পেকটার নামের গাড়িটি ২০৩০ সাল নাগাদ উত্পাদন শুরুর পরিকল্পনা করছে প্রতিষ্ঠানটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *