ব্রাজিলে রেকর্ড সয়াবিন বাণিজ্যের সম্ভাবনা
ব্রাজিল বিশ্বের শীর্ষ সয়াবিন সরবরাহকারী দেশ। ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) দেশটির সয়াবিন বাণিজ্য রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ইতিহাসের সর্বোচ্চ উৎপাদন দেশটির বাণিজ্য প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করছে। ব্রাজিলের সরকারি সংস্থা কোনাব ও বিশ্লেষকরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
কোনাবের দেয়া তথ্য বলছে, নতুন মৌসুমে ব্রাজিলে ১৫ কোটি ৩৫ লাখ টন সয়াবিন উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে ৯ কোটি ৬৬ লাখ টন রফতানির পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির। অর্থাৎ গত মৌসুমের তুলনায় রফতানি ১ কোটি ৮০ লাখ টন বাড়তে পারে। সয়াবিন মাড়াইয়ের হার ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৫ কোটি ৬ লাখ ৮০ হাজার টনে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ব্রাজিলের ভোজ্যতেল উৎপাদক অ্যাসোসিয়েশনের দেয়া তথ্যমতে, নতুন মৌসুমে দেশটির সয়াবিন রফতানি দাঁড়াতে পারে ৯ কোটি ৩০ লাখ টনে। মাড়াইয়ের পরিমাণ ৫ কোটি ২৫ লাখ টনে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে মার্কিন কৃষি বিভাগ বলছে, এ মৌসুমে দেশটিতে ৮ কোটি ৯৫ লাখ টন সয়াবিন রফতানি ও ৫ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টন মাড়াইয়ের প্রত্যাশা রয়েছে। সরবরাহ বৃদ্ধির সম্ভাবনা ও মুদ্রার অনুকূল বিনিময় মূল্য রফতানি প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করছে।
পণ্যবাজার বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৩ সালে ব্রাজিলের সয়াবিন রফতানি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে। এর মূল কারণ চীনে ব্রাজিলিয়ান সয়াবিনের চাহিদায় উল্লম্ফন।
চীন বিশ্বের শীর্ষ সয়াবিন আমদানিকারক। এ বছর দেশটির আমদানি ৯ কোটি ৮০ লাখ টনে উন্নীত হতে পারে। এক বছরের ব্যবধানে আমদানি ৮ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়বে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রকে হটিয়ে চীনের শীর্ষ সয়াবিন সরবরাহকারী ছিল ব্রাজিল। চলতি বছরও দেশটি এ অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হবে।
চলতি বিপণন মৌসুমে ব্রাজিল থেকে ৬ কোটি ১৭ লাখ টন সয়াবিন আমদানির প্রাক্কলন করেছে চীন। এক বছরের ব্যবধানে আমদানি ৯ শতাংশ বাড়তে পারে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হতে পারে মাত্র ২ কোটি ৮৪ লাখ টন।
পণ্যবাজার বিশ্লেষকরা যখন থেকে রেকর্ড সয়াবিন উৎপাদনের পূর্বাভাস দেয়া শুরু করেন, তখন থেকেই এটির দাম কমতে শুরু করে। অতিরিক্ত সরবরাহের আশঙ্কায় মূলত দাম কমছে। চলতি বছর পণ্যটির বাজার নিম্নমুখী থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এ বছর বিশ্বজুড়ে যে পরিমাণ সয়াবিন উৎপাদন হতে পারে, সে পরিমাণ চাহিদা নেই। ফলে বাজারে উদ্বৃত্ত দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত সরবরাহের কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন ব্রাজিলের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।