উত্তরা ফাইন্যান্সে ১২ স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ

স্টাফ রিপোর্টার

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টে ১২ জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী আমানতদার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে এই স্বতন্ত্র পরিচালকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। এর আগে কোম্পানিটিতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিএসইসিকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল।

১২ স্বতন্ত্র পরিচালকের মধ্যে রয়েছেন- একাডেমিক প্লাস ইকোনোমিস্টের প্রস্তাবিত চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ ফরহাত আনোয়ার, ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের অধ্যাপক ড. হাফিজ মো. হাসান বাবু, প্রশাসন ও গভর্নেন্সের মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, ল’ এনফোর্সিং এজেন্সির মো. মইনুর চৌধুরী, অ্যাকাউন্টিংয়ের মাহফুজুল হক, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেট মো. মাহমুদ হোসাইন, অর্থনীতিবিদ মাহবুব উজ জামান, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেট এবং ফিন্যান্সিয়াল স্পেশালিস্ট মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন চৌধুরী, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেট মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, বিজনেস ল’র কাওসার আহমেদ, ব্যাংকিং ডিপার্টমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম এবং সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল।

উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদে স্বতন্ত্র পরিচালক অন্তর্ভুক্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠির বিষয়ে উল্লেখ করে গভর্নরকে দেওয়া বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, উত্তরা ফাইন্যান্সের আমানতকারী ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বতন্ত্র পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালনে একজন অতিরিক্তসহ যোগ্য মোট ১২ জন ব্যক্তির একটি তালিকা পূর্ণাঙ্গ জীবন বৃত্তান্তসহ পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গত ২৩ জুন উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম শামসুল আরেফিনকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। উত্তরা ফাইন্যান্স থেকে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ আত্মসাতে অন্যদের সহায়তা ও আর্থিক প্রতিবেদনে তথ্য গোপনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে এসব অনিয়ম প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে ধরা পড়ে, পরে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান রহমান রহমান হকের (কেপিএমজি) প্রতিবেদনেও উঠে আসে।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেওয়া অপসারণের চিঠিতে বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ১৯৯৩ এর ২০(৩) ধারার আওতায় উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেডে বিশেষ নিরীক্ষা সম্পাদনের জন্য নিযুক্ত সিএ ফার্ম রহমান রহমান হকের (কেপিএমজি) করা বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানটিতে সংঘটিত ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থেকে প্রতিষ্ঠান ও আমানতদারদের জন্য ক্ষতি করায় প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম শামসুল আরেফিনকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর পদ হতে অপসারণ করা হলো। পাশাপাশি বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকায় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উত্তরা ফাইন্যান্সকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

উত্তরা ফাইন্যান্স ১৯৯৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ১৩১ কোটি ৪৮ লাখ পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ১৩ কোটি ১৪ লাখ ৮১ হাজার ৫০৪ টি। এরমধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে আছে ৪২ দশমিক ৪৪ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ারের মধ্যে ১৭ দশমিক ২৩ সাধারণ বিনিয়োগকারী, ৩২ দশমিক ৫১ শতাংশ প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগকারী এবং ৭ দশমিক ৮২ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *