দুই সপ্তাহের সর্বোচ্চে তামার দাম
আন্তর্জাতিক বাজারে তামার দাম বেড়ে দুই সপ্তাহের সর্বোচ্চে উঠেছে। বিশ্বের শীর্ষ তামা ব্যবহারকারী দেশ চীন কভিড-১৯ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করার ঘোষণা দেয়ায় ধাতুটির বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি ডলারের দুর্বল বিনিময় মূল্যও দাম বাড়াতে সহায়তা করছে। খবর বিজনেস রেকর্ডার।
গতকাল লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জে (এলএমই) তিন মাস সরবরাহ চুক্তিতে তামার দাম শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি টনের মূল্য স্থির হয়েছে ৮ হাজার ৫০৫ ডলার ৫০ সেন্টে। ১৪ নভেম্বরের পর এটি সর্বোচ্চ দাম। ওই সময় প্রতি টন তামার মূল্য দাঁড়িয়েছিল ৮ হাজার ৫২০ ডলার ৫০ সেন্টে।
এদিকে সাংহাই ফিউচারস এক্সচেঞ্জে জানুয়ারিতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামার মূল্য দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫৯৯ ডলার ৭০ সেন্টে। একদিনের ব্যবধানে ধাতুটির দাম ১ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। সাংহাইয়ে ১৬ নভেম্বরের পর এটিও সর্বোচ্চ দাম।
কভিড-১৯ সংক্রান্ত স্বাস্থ্য ঝুঁকি প্রতিরোধে নীতিমালায় পরিবর্তন আনছে বেইজিং। অনেক শহরে এরই মধ্যে বিধিনিষেধ শিথিলের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। উঠিয়ে নেয়া হচ্ছে লম্বা সময় ধরে চলমান লকডাউন। অর্থনীতির ওপর থেকে চাপ কমাতে কভিড-১৯ প্রতিরোধে নেয়া পদক্ষেপ প্রতিপালনের কঠোরতা কমানোরও ইঙ্গিত দিয়েছে চীন।
চীনের জিরো কভিড নীতির কারণে দেশটিতে সব ধরনের পণ্যের চাহিদায় ভাটা পড়ে। ব্যাহত হয় শিল্প-কারখানার কার্যক্রম। এতে গত মাসের শেষ দিকে দেশটিতে নজিরবিহীন বিক্ষোভ দেখা দেয়। বিক্ষোভের পরই দেশটির সরকার বিধিনিষেধ শিথিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পরই তামার দাম বাড়তে শুরু করেছে।
এদিকে নানা প্রতিবন্ধকতায় তামার বৈশ্বিক বিগলন খাতে গতি ফিরছে না। বর্তমানে দুই বছরের গড় হারের নিচেই অবস্থান করছে বিগলন কার্যক্রম। বিগলন প্রতিষ্ঠানগুলো এবং খনিগুলোর মধ্যে ট্রিটমেন্ট চার্জ নিয়ে দরকষাকষি সম্প্রতি বেড়েছে। এটি বিগলন কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। স্যাটেলাইট বিশ্লেষক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান ম্যারেক্স সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে বিগলন কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় বাজার সরবরাহ সংকট তীব্র আকার ধারণ করছে। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্লাটসের এক প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে তামার বৈশ্বিক সরবরাহে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এ ঘাটতির তীব্রতা ব্যাপকভাবে নির্ভর করছে শিল্প খাতটির সম্প্রসারণ সক্ষমতার ওপর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জ্বালানি স্থানান্তরজনিত বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ধাতুটির চাহিদা এ সময়ের মধ্যে বাড়িয়ে পাঁচ কোটি টনে উন্নীত করতে পারে, বর্তমানে যা ২ কোটি ৫০ লাখ টনে অবস্থান করছে।