এফসিসির অনুমতি পেল স্পেসএক্স
দ্বিতীয় প্রজন্মের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে ফেডারেল কমিউনিকেশন কমিশন (এফসিসি) বা মার্কিন নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমতি পেয়েছে স্পেসএক্স। ফলে ইলোন মাস্কের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি সাড়ে সাত হাজার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে পারবে। খবর টেকটাইমস।
২০২০ সালে প্রথম ২৯ হাজার ৯৮৮টি দ্বিতীয় প্রজন্মের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য আবেদন করেছিল স্পেসএক্স। এর মধ্যে সাড়ে সাত হাজার স্যাটেলাইট তৈরি, স্থাপন ও পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তবে ভূপৃষ্ঠ থেকে যথাক্রমে ৫২৫, ৫৩০ ও ৫৩৫ কিলোমিটার উচ্চতায় স্যাটেলাইটগুলো বসাতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, পৃথিবীর নিম্নকক্ষপথে এসব স্যাটেলাইট স্থাপনের মাধ্যমে দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের অধিবাসীদের দ্রুতগতির ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানে কাজ করছে মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএস্ক ও স্টারলিংক। বর্তমানে স্পেসএক্সের স্যাটেলাইট স্থাপনের সংখ্যায় লাগাম টানতে চায় এফসিসি। কক্ষপথে বিস্ফোরণ ও মহাকাশের নিরাপত্তা নিশ্চিতেই এ উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি। এফসিসির বক্তব্য, এর ফলে মহাকাশেও কোনো সমস্যা হবে না। সেই সঙ্গে ভূপৃষ্ঠ থেকে যেসব স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণ করা হয় সেগুলোর কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত হবে না।
অন্যদিকে মহাকাশে স্পেসএক্সের অতিরিক্ত ৩০ হাজার স্যাটেলাইট বসানোর বিষয়ে বিভিন্ন কোম্পানি, এমনকি সরকারি গবেষণা সংস্থা নাসাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কমিশনকে পাঠানো এক চিঠিতে নাসা নিজস্ব গবেষণা ও যাত্রীবাহী মহাকাশ মিশনে অতিরিক্ত স্যাটেলাইট স্থাপনের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছে।
নাসা বলেছে, বিশালসংখ্যক স্টারলিংক স্যাটেলাইট মহাকাশে সংঘর্ষের ঝুঁকি বাড়ানোর পাশাপাশি উৎক্ষেপণের সময়ও কমিয়ে দিতে পারে। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে বাকি অংশের কার্যক্রম স্থগিত রাখলেও বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্টদের আশা ভবিষ্যতে এফসিসি এ আবেদনেও অনুমোদন দেবে। এর আগে এক বিবৃতিতে পৃথিবীর অন্যতম ধনী মাস্ক বলেন, দ্বিতীয় প্রজন্মের স্টারলিংক স্যাটেলাইট আগেরগুলোর তুলনায় আকারে অনেক বড় হবে। আর এগুলো উৎক্ষেপণের জন্য কোম্পানির স্টারশিপ রকেটের প্রয়োজন।
বিশাল অ্যান্টেনা থাকার কারণে স্যাটেলাইটগুলোর আকারও বড়। মোবাইল টাওয়ারের মতোই পৃথিবীর বিভিন্ন ফোনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সক্ষমতা থাকবে এতে। এনগ্যাজেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগস্টে টি-মোবাইল ও স্পেসএক্স যৌথভাবে কাজ করার যে ঘোষণা দিয়েছে সেটি অনেকটাই স্টারলিংকের দ্বিতীয় প্রজন্মের স্যাটেলাইটের ওপর নির্ভরশীল।
কোম্পানির লক্ষ্য অংশীদারত্বের মাধ্যমে বিভিন্ন মোবাইল ডেড জোন বন্ধ করা। পাশাপাশি উন্মুক্ত আকাশের নিচে থাকা যেকোনো জায়গায় তাদের ইন্টারনেট পরিষেবা ছড়িয়ে দেয়া। সেটা মাঝসমুদ্রে হলেও। অন্যদিকে স্টারলিংক এভিয়েশন চালুর মাধ্যমে ফ্লাইট চলাকালীন ওয়াই-ফাই সংযোগের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাও চালু করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
আকাশপথে চলাচলের সময় গ্রাহকদের ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান নিশ্চিতে যখন তুমুল প্রতিযোগিতা চলছে তখন স্টারলিংক দেড় লাখ ডলার মূল্যের অ্যান্টেনা সরবরাহের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিতে কাজ করছে। হাজার হাজার ইন্টারনেট স্যাটেলাইট সরবরাহকারী স্টারলিংকের মালিকানা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স প্রতি মাসে প্রাইভেট জেটে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য সাড়ে ১২ হাজার থেকে ২৫ হাজার ডলার পর্যন্ত ফি নেবে। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে স্টারলিংক এভিয়েশন টার্মিনালগুলো সরবরাহ শুরু করবে।