পণ্য পরিবহনে সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ চান ব্যবসায়ীরা

স্টাফ রিপোর্টার

মাছ, মাংস, ফলমূলসহ শাক-সবজির আধুনিক সংরক্ষণ, পরিবহন এবং বাজারজাতকরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে উৎপাদক ও ভোক্তা পর্যায়ে দামের ব্যবধান কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন কাঁচাপণ্য আড়তদার এবং পাইকারি ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, সড়কপথে অনাকাঙ্ক্ষিত চাঁদাবাজির কারণেও পণ্যের ব্যয় বেড়ে যায়, যার প্রভাব পড়ে ভোক্তা পর্যায়ের দামে। পণ্য পরিবহনে সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারের হস্তক্ষেপ চান ব্যবসায়ীরা।

মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি (এফবিসিসিআই) কার্যালয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটি অন কাঁচামাল আড়তদার, মার্কেটিং অ্যান্ড সাপ্লায়ার্সের প্রথম সভায় ব্যবসায়ীরা এসব কথা বলেন।

তারা বলছেন, কাঁচাপণ্য পরিবহনে বড় প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে। কৃষক থেকে আড়ত পর্যন্ত পৌঁছাতে অন্তত ৩০ শতাংশ পণ্য নষ্ট হয় পরিবহনের সময়।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআইয়ে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, কাঁচাপণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজির শিকার হয়ে ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছে প্রায়ই অভিযোগ করেন। ভোক্তার স্বার্থরক্ষায় পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। একই সঙ্গে আড়ত এবং বাজারগুলোতে অসাধু প্রতিযোগিতা ও চাঁদাবাজি বন্ধে বাজার কমিটিগুলোকেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

উন্নত বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণে নগরীতে গড়ে ওঠা নতুন নতুন আবাসন প্রকল্পগুলোতে আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন বাজার স্থাপনে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এবং আবাসন ব্যবসায়ীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

মাছ, মাংস, শাক-সবজিসহ কাঁচাপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্যের গুরুত্ব তুলে ধরে এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, সারাদেশে কতগুলো আড়ত, মোকাম এবং কৃষি ভাণ্ডার রয়েছে তার তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। দৈনিক চাহিদা এবং উৎপাদনের সঠিক তথ্য নিরূপণের মাধ্যমে বাজার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে।

এছাড়া পণ্য পরিবহনে নিজেদের দুর্বলতা সংশোধনে ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি জোর দেন পণ্যের আধুনিক প্যাকেজিংয়ের ওপর।

সভায় কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি এমরান মাস্টার বলেন, আড়তদারদের নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আসলে আড়তদাররা সরাসরি মূল্য নির্ধারণের সঙ্গে জড়িত না। অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে কৃষকরা এখন সরাসরি পণ্য বিক্রি করেন। আড়তদাররা শুধু একটা কমিশন পান। সরবরাহ বিঘ্নিত হলে বাজারে তার প্রভাব পড়ে।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে পচনশীল পণ্য সংরক্ষণে রাজধানীসহ সারাদেশে পর্যাপ্ত ওয়্যারহাউজ নির্মাণ, কন্ট্রোলড অ্যাটমোস্ফিয়ার বা তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ সুবিধা সম্পন্ন স্টোরেজ গড়ে তোলা ও সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তির দাবি জানান বক্তারা।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- এফবিসিসিআই পরিচালক শফিকুল ইসলাম ভরসা, বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, আবু মোতালেব, ইকবাল শাহরিয়ার, শমী কায়সার, আক্কাস মাহমুদ, সাবেক পরিচালক খন্দকার রুহুল আমিন, কমিটির কো-চেয়ারম্যান মাহবুব ইসলাম রুনু, মো. ওমর ফারুক, মো. নূর মোহাম্মদ, মো. মনিরুল ইসলাম, লুৎফুর রহমান বাবুল ও সোহেল রানাসহ অন্য সদস্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *