মিরাজের ঘূর্ণিতে দিশেহারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ
সাম্প্রতিক অতীতে এতটা বিপর্যয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর কখনও পড়েছিল কি না সন্দেহ। মিরপুরের শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেটকে যখন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যখন ব্যাটিং করছিল, তখন মনে হচ্ছিল যেন এই উইকেট ব্যাটিংয়ের স্বর্গরাজ্য। কিন্তু যখন ক্যারিবীয়রা ব্যাটিং করতে আসলো তখন মনে হচ্ছে এখানে তো ব্যাটসম্যানদের জন্য কিছুই নেই। পুরোপুরি স্পিনারদের জন্য বানানো উইকেট।
স্পিনারদের জন্যই বানানো হয়তো। না হয় কি বাংলাদেশ আর চার স্পেশালিস্ট স্পিনার নিয়ে খেলে কিংবা একজনও পেস বোলার না নিয়ে খেলে! তার ফল হাতে নাতেই পেতে শুরু করেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন শেষ বিকেলে সাকিব আর মিরাজ মিলে যেভাবে ক্যারিবীয়দের ওপর মায়াবি ঘূর্ণি জাল বিস্তার করেছিলেন, তাতেই দিশেহারা হয়ে পড়েছিল সফরকারীরা।
দ্বিতীয় দিন শেষ বিকেলে ৫জন আউট হয়েছিলেন ক্যারিবীয়দের, যাদের সবগুলোই বোল্ড। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে যা এই প্রথম। কোনো দলের সেরা ৫ ব্যাটসম্যানই বোল্ড হলেন, যার সবগুলোই স্পিনারদের হাতে। আবার ক্রিকেটের ইতিহাসে ১২৮ বছরে এই প্রথম সেরা ৫ জন ব্যাটসম্যানই হলেন বোল্ড।
৫ উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। উইকেটে আশার প্রতীক হয়ে ছিলেন শিমরন হেটমায়ার। তিনি ছিলেন ৩২ রানে এবং শ্যান ডওরিচ ছিলেন ১৭ রানে অপরাজিত। তৃতীয় দিন ক্যারিবীয়দের প্রত্যাশা ছিল এই জুটি হয়তো কিছু একটা করে দেখাতে পারবে। তাদের সম্মানটাও হয়তো বাঁচাতে পারবে।
কিন্তু দিনের শুরুতে সাকিব আল হাসানকে হেটমায়ার ছক্কা মেরে শুরু করে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিলেও সেটা ছিল শুধুই অলীক কল্পনা। কারণ, এই জুটি মাত্র ১১ রান যোগ করার পরই মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণি ফাঁদে পড়ে যায়। মিরাজের হাতেই রিটার্ন ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন হেটমায়ার। ২৯ থেকে ৮৬, ৫২ রানের একটি দারুণ জুটি গড়েছিলেন হেটমায়ার আর ডওরিচ। অবশেষে সেটাও ভেঙে দিলেন মিরাজ। ৩৯ রান করে ফিরে যান হেটমায়ার।
এরপর মাঠে নামেন দেবেন্দ্র বিশু। কিন্তু তিনি টিকতে পারলেন কেবল ১০ বল। রান করলেন ১টি। অবশেষে মিরাজের বলেই সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান বিশু। ৮৮ রানে পড়লো ৭ম উইকেট। মাঠে নামলেন কেমার রোচ। তিনিও করলেন ১ রান। মিরাজের বলে উইকেটের পেছনে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনিও। ৬ উইকেট পেয়ে গেলেন মিরাজ। ৯২ রানে পড়লো ৮ম উইকেট।
এ রিপোর্ট লেখার সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৩৩.২ ওভারে ৮ উইকেট হারেয়ে ১০০। ২৮ রান নিয়ে ডওরিচ এবং ৩ রান নিয়ে ব্যাট করছেন জোমেল ওয়ারিকান। বাংলাদেশ এখনও এগিয়ে রয়েছে ৪০৮ রানে।